সীতাকুণ্ডে বিএনপির এক নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় কুপিয়ে তাঁর ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে দুর্বৃত্তরা। নিহত ব্যক্তির নাম নুর মোস্তফা ওরফে বজল (৫০)। আজ রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার বারৈয়ারঢালার পশ্চিম লালানগর গ্রামের মৌলভীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নুর মোস্তফা বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন বিএনপি সহসভাপতি ও গ্রাম সরদার। তাঁর ভাই ইসমাইল হোসেন উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি। এলাকার চিহ্নিত এক ডাকাতকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তৌহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ১০-১৫ জনের দল নিয়ে মৌলভীপাড়ায় নতুন পুকুরপাড়ের দোকানের সামনে আসেন। সেখানে নুর মোস্তফা আগে থেকেই ছিলেন। ওই সময় তৌহিদুলের সঙ্গে নুর মোস্তফার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নুর মোস্তফার বুকে ও পেটে গুলি করা হয়। কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় তাঁর ডান হাত। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন নুর মোস্তফাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নুর মোস্তফার আত্মীয় দিদারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশি গ্রেপ্তারের ভয়ে দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতি ও দস্যুতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে ধরতে অভিযান শুরু করে। এ জন্য নুর মোস্তফাকে অভিযুক্ত করে আসছেন তৌহিদুল।
বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মাসুম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত তৌহিদুল ও নুর মোস্তফা পরস্পরের আত্মীয়। তৌহিদুল এক সময় যুবদল করতেন। এখন তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নানা অপকর্মের কারণে তাঁকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল। এ নিয়ে নুর মোস্তফার সঙ্গে তৌহিদুলের বিরোধ চলছিল। এর জেরে তৌহিদুলের নেতৃত্বে খুনের ঘটনা ঘটে।
বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম দাবি করেন, যুবলীগে তৌহিদুলের কোনো পদ–পদবি নেই। এটি তাঁদের পাড়ার বিরোধ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত নুর মোস্তফার ডান হাত বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তাঁর বুকে ও পেটে দুটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তৌহিদুল একজন চিহ্নিত ডাকাত। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তাঁর এলাকায় আসার খবর পুলিশ জেনে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এ খুনের ঘটনা ঘটিয়েছেন।