শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে প্লাবিত হয় উপজেলা সদর বাজার। শুক্রবার দুপুরে
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে প্লাবিত হয় উপজেলা সদর বাজার। শুক্রবার দুপুরে

ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলে উপজেলা পরিষদসহ ৪০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলা পরিষদ চত্বর, সদর বাজারসহ ৪০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আজ শুক্রবার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। পাহাড়ি ঢলে মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা ও জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীর পানি উপচে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের ঝিনাইগাতী বাজার, খৈলকুড়া, দীঘিরপাড়, বনকালি, চতল, আহম্মদনগর, বৈরাগীরপাড়া, সুরিহারা, কালীনগর; ধানশাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ দাড়িয়ারপাড় ও কান্দুলী; গৌরীপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর এবং হাতিবান্ধা ইউনিয়নের দুটি গ্রামসহ অন্তত ৪০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এসব এলাকার আমন ধান ও সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয় এবং মাছের খামার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢলের পানির প্রবল চাপে অনেক কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ঝিনাইগাতী সদর বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ আছে।

পাউবোর শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান বলেন, ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের খৈলকুড়া, দীঘিরপাড় ও পূর্ব দীঘিরপাড় এলাকায় মহারশি নদীর বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে যাওয়ায় পানি প্রবল বেগে উপজেলা পরিষদ চত্বর ও ঝিনাইগাতী সদর বাজারে ঢুকে পড়ে। পানি কমে গেলে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা হবে।

ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মহারশি নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ ভোর থেকে ঝিনাইগাতী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এতে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, উপজেলার ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির আমন আবাদ সম্পূর্ণ ও ১০০ হেক্টর জমির সবজি আবাদ ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যাবে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারী মো. গোলাপ হোসেন বলেন, ঢলের পানিতে উপজেলার ৫০টি মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রাথমিক হিসেবে খামারের অবকাঠামোসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল পাহাড়ি ঢলকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড়ি ঢলের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে পানিবন্দী মানুষকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হবে।