আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছেলের বউভাতের অনুষ্ঠানের জন্য শহীদ মিনারের সামনে রান্নার আয়োজন। শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের ঐতিহাসিক অম্বিকা ময়দানে
আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছেলের বউভাতের অনুষ্ঠানের জন্য শহীদ মিনারের সামনে রান্নার আয়োজন। শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের ঐতিহাসিক অম্বিকা ময়দানে

আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছেলের বউভাত, শহীদ মিনারের সামনে রান্নার আয়োজন

ছেলের বউভাতের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ফরিদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ঐতিহাসিক অম্বিকা ময়দানে রান্নাবান্নার আয়োজন করেছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফরিদপুর পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাসুমা বেগম।

ফরিদপুর শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলটি বিভিন্ন কাজে ভাড়া দেওয়া হয়। হলটি শহরের ঝিলটুলী মহল্লার ঐতিহাসিক অম্বিকা মাঠের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। অম্বিকা হলের উত্তর পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। হলের পশ্চিম কোনায় নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের বউভাত কিংবা যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে অম্বিকা মেমোরিয়াল হলটি ভাড়া দেওয়া হয়। রান্না করা হয় অম্বিকা মেমোরিয়াল হলের দক্ষিণে অবস্থিত জুবিলি ট্যাংকের পাশের জায়গায়। যেখানে টিনের ছাপরা ঘরও নির্মাণ করা আছে। কিন্তু আজ শুক্রবার বউভাতের অনুষ্ঠানের জন্য অম্বিকা ময়দানের পূর্ব পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে রান্নার আয়োজন করা হয়।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারের সামনে ইট দিয়ে চারটি চুলা বানানো হয়েছে। ওপরে লাল রঙের ত্রিপল টানিয়ে চলছে রান্নাবান্নার কাজ।

অম্বিকা হলের উত্তর পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। হলের পশ্চিম কোনায় নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল

সেখানে কাজ করা ব্যক্তিরা জানান, ফরিদপুর পৌরসভার ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাসুমা বেগমের ছেলের বিবাহোত্তর বউভাত অনুষ্ঠানের জন্য এ রান্নার কাজ চলছে। আজ রাতে অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা আছে।

কাউন্সিলর মাসুমা বেগম শহরের আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা। তিনি ফরিদপুর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, শহীদ মিনারের সামনে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। জানার পর নিজেই লজ্জিত হয়ে পড়েছি। আমি বুঝতে পারছি, ভুল হয়ে গেছে।’ তিনি ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। ১ নম্বর প্যানেল মেয়র মনিরুল ইসলাম বলেন, অম্বিকা মেমোরিয়াল হলের পাশে রান্নার নির্দিষ্ট জায়গা আছে। সেখানে রান্নার আয়োজন না করে কেন মাঠে শহীদ মিনারের সামনে করা হলো, তা বোধগম্য নয়।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শহীদ বেদি আমাদের পবিত্র জায়গা, সেখানে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। কাজটি করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। পৌর পরিষদের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’