ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বোমা মেরে জুয়েলারি দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ৭২ ঘণ্টা পার হলেও লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার এবং জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গত বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর এলাকায় নাসিরুদ্দিন সুপার মার্কেটের নিউ আল-আমিন জুয়েলার্সে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। দিনদুপুরে হাতবোমা মেরে এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন মণ্ডলের (৪৫) পায়ে গুলি করে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিউ আল–আমিন জুয়েলার্সের মালিক স্বপন মণ্ডলের ছোট ভাই বিপ্লব মণ্ডল বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলায় নিউ আল-আমিন জুয়েলার্সে হাতবোমা বিস্ফোরণ ও দোকানের মালিককে গুলি করে ১৬০ ভরি সোনা লুটের অভিযোগ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
আবদুল্লাহপুর বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভোলা কুণ্ডু বলেন, ‘আমাদের স্বর্ণ মার্কেট এলাকায় এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। যারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা পরিকল্পিত। আমাদের সমিতির সভাপতি স্বপন মণ্ডলকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে তাঁর দোকান থেকে স্বর্ণ লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমরা সত্বর এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
মামলায় দোকানের মালিককে গুলি করে ১৬০ ভরি সোনা লুটের অভিযোগ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
দিপা জুয়েলার্সের মালিক সুমন দাস বলেন, ‘নাসির মার্কেটের সাতটি দোকানসহ আবদুল্লাহপুর বাজার এলাকায় কমপক্ষে ৪০টি স্বর্ণকারের দোকান রয়েছে। বুধবারের ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। এতে আমরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন সকাল থেকে বৃষ্টি ছিল এবং ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগে থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা চাই প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত আসামিদের সত্বর গ্রেপ্তার করুক এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করুক।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দীন কবীর বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আবদুল্লাহপুর বাজার এলাকার সব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এসব ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পৃথকভাবে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছে। আশা করছি, দ্রুত এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’