ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ধানসিঁড়ি নামের একটি রেস্তোরাঁয় ঢুকে মালিক, ব্যবস্থাপক ও রেস্তোরাঁর এক কর্মীকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত হন রেস্তোরাঁর মালিক আবদুল ওয়াদুদ ও ব্যবস্থাপক সফিউল্লাহ। আহত ব্যবস্থাপক সফিউল্লাহ পৌর ছাত্রলীগের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি। গতকাল রাতেই তাঁদের দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অপরজন হলেন রেস্তোরাঁর কর্মী মো. মোস্তফা। তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার সময় রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছিলেন অনেক গ্রাহক। অতর্কিতে হামলা শুরু হওয়ায় তাঁদের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ ১৫ জনের মতো যুবক রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়েন। তাঁদের কয়েজনের মুখে মুখোশ ছিল। এ সময় ক্যাশে বসে থাকা ব্যবস্থাপক সফিউল্লাহকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তাঁরা। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে দোকানের মালিক আবদুল ওয়াদুদ এবং দোকান কর্মচারী মোস্তফাকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। একপর্যায়ে দোকানে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আবদুল ওয়াদুদ ও সফিউল্লাহকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় যুবলীগের কয়েকজন কর্মী ছিলেন। দোকান ও আশপাশের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলেই তাঁদের শনাক্ত করা যাবে। কয়েক বছর ধরে শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে কিশোরদের একটি বাহিনী এলাকায় নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। বারবার নির্যাতিত হওয়ার পরেও স্থানীয় মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পান না।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ফেনী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, হামলার ঘটনায় সংগঠনের কোনো কর্মী জড়িত নন।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থৈয়াই অংপ্রু মারমা বলেন, ‘প্রকাশ্যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনাটিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।’