ফেনীতে প্রায় এক মাস আগে মঞ্জুর আলম নামের এক অটোরিকশাচালককে খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাঁর হলেন মো. আইয়ুব খান (৩০) ও তাঁর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার (২৬)। সাদিয়া নিহত মঞ্জুর আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। তবে পরে দুজনের বিচ্ছেদ হয়। এরপর আইয়ুব খানকে বিয়ে করেন সাদিয়া।
গতকাল রোববার রাতে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনি এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজনকে ফেনী মডেল থানায় সোপর্দ করে র্যাব।
নিহত মঞ্জুর ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের লেমুয়া মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। গত ১০ জুন রাতে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার আইয়ুব ও সাদিয়া একই উপজেলার কেরানিয়া এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব জানায়, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে বছর দেড়েক আগে সাদিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় মঞ্জুরের। তবে পারিবারিক কলহের জেরে কিছুদিন পর সাদিয়ার সঙ্গে মঞ্জুরের বিচ্ছেদ হয়। এ ঘটনায় সাদিয়া মঞ্জুরের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এই ক্ষোভ থেকে স্বামী আইয়ুবকে নিয়ে মঞ্জুরকে খুনের পরিকল্পনা করেন সাদিয়া। এরই অংশ হিসেবে তাঁরা মঞ্জুরকে কুপিয়ে জখম করে এবং দাঁত উপড়ে ও মুখমণ্ডল থেঁতলে দিয়ে লাশ ফেনীর ছনুয়া এলাকায় রেখে পালিয়ে যান।
নিহত মঞ্জুরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খুনের ঘটনার দিন একজন যাত্রী নিয়ে লেমুয়া বাজার এলাকা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দিকে রওনা দিয়েছিলেন মঞ্জুর। রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিতে থাকেন। একপর্যায়ে স্থানীয় বোগদাদিয়া ফাঁড়িতে গিয়ে জানতে পারেন পুলিশ একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পরে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে গিয়ে লাশটি মঞ্জুরের বলে শনাক্ত করেন। খুনের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন মঞ্জুরের প্রথম স্ত্রী।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, খুনের ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপন করেন সাদিয়া ও আইয়ুব। গোপন সূত্রে তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র্যাব দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজন খুনের ঘটনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের ফেনী সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমরান হোসেন বলেন, দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে ফেনী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।