কুমিল্লায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে গলা কেটে হত্যা

আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হককে (৪০) গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের আলেখাচর গ্রামে এনামুলকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা তিনটার দিকে এনামুলের মৃত্যু হয়।

এনামুল হক দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ওই ইউনিয়নের আলেখাচর গ্রামের আবদুল ওয়াদুদের ছেলে। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সঞ্জু মোর্শেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নিয়াজ অভিযোগ করেন, আজ দুপুরে এনামুল হক আলেখাচর গ্রামের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য কাজী জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁর ভাই কাজী আমানুল ইসলাম ও কাজী সাইদুল ইসলাম তাঁকে (এনামুল) টেনেহিঁচড়ে মাটিয়ে শুইয়ে ফেলেন। এরপর তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এনামুল হকের গলা কেটে পালিয়ে যান। পরে এলাকাবাসী এনামুল হককে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে নেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা তিনটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এনামুলের মৃত্যু হয়।

আহমেদ নিয়াজের দাবি, রাজনৈতিক ও স্থানীয় মাদ্রাসা নিয়ে বিরোধের জেরে জামায়াতের কাজী জহিরুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন এনামুলকে হত্যা করেছেন।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। তাই তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে জামায়াতে ইসলামীর অন্তত দুই নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কী কারণে ঝামেলা হয়েছে, সেটা তাঁরা জানেন না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলেখাচর দক্ষিণপাড়া জমিরিয়া তালিমুল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার দখল নিয়ে জামায়াতের নেতা জহিরুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হকের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওই মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটিতে ছিলেন এনামুল হক। জহিরুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসা কমিটি নেতৃত্ব দখলের চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি জহিরুল ইসলামের মাদক সেবন ও জুয়া খেলার একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য জহিরুল ইসলামের লোকজন এনামুল হককে দায়ী করেন। এতে জহিরুল ইসলামের লোকজন এনামুল হকের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে হামলা করেন।

ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় মামলা হবে।