ময়লা-আবর্জনায় সয়লাব নোয়াখালী পৌরসভা এলাকা। সব সড়কেই চোখে পড়বে ময়লার স্তূপ। সড়কের পাশের ভাগাড়গুলো উপচে পড়ছে। গোটা শহরেই একধরনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। দিনের পর দিন চলে আসা এ পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শহরের বাসিন্দারা।
আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন নোয়াখালী পৌরসভার অধীন জেলা শহর মাইজদীর হাসপাতাল সড়ক, হাউজিং সেন্ট্রাল রোড, সরকারি আবাসিক এলাকার সড়ক, নোয়াখালী সরকারি কলেজ রোড, মাস্টারপাড়া সড়ক, হাকিম কোয়ার্টার সড়ক, নোয়াখালী সুপার মার্কেটসংলগ্ন সড়ক, জেলা জজ আদালত সড়ক, পৌর বাজার, বিশ্বনাথ, নাপিতের পোল, মাইজদী বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি সড়কের কোথায়ও না কোথায়ও ময়লার স্তূপ পড়ে আছে। ওই স্তূপের ওপরই আবার ময়লা এনে ফেলছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তারপরও পৌরসভার পরিচ্ছন্নতার কাজে থাকা গাড়িগুলো ময়লা সরিয়ে নিচ্ছে না। ময়লা-আবর্জনা মাড়িয়ে সড়কে চলাচল করতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন নাগরিকেরা।
মাইজদী হাউজিং এস্টেটের সেন্ট্রাল রোডের আশপাশে রয়েছে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। ময়লার দুর্গন্ধে বিরক্তি প্রকাশ করেন হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভাগাড়টি থেকে ময়লা সরানো হয় না। ময়লার দুর্গন্ধে হাঁটা দায়। এসব দেখার কেউ নেই।’
শহরের হাসপাতাল সড়কে নোয়াখালী ডায়াবেটিক সমিতির হাসপাতালের সামনে ময়লা মাড়িয়েই চলছেন পথচারীরা। বেসরকারি হাসপাতালের নার্স জেসমিন আক্তার নাক চেপে ধরে ময়লার পাশ দিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় এই প্রতিবেদককে দেখে বলেন, ‘ভাই, আমরা এই ময়লার দুর্গন্ধে অসহ্য হয়ে গেছি।’
শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুরে এম এ রশিদ স্কুলের উত্তরে সড়কের পাশে নির্মাণ করা একটি পাকা ভাগাড় ময়লার চাপে ভেঙে পাশের সড়কে পড়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে ওই ভাগাড় থেকে ময়লা সরানো হয় না। আশপাশে বাসাবাড়ির শত শত পরিবার সেখানে ময়লা ফেলেন। দীর্ঘদিন ময়লা না সরানোর কারণে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। ময়লার দুর্গন্ধে বাসিন্দাদের দম বন্ধ হয়ে আসে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নোয়াখালী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা নিজেরাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা যে সড়ক দিয়ে ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা পরিবহন করেন, ওই সড়কের উন্নয়নকাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। আবার পৌরসভার সড়কের অবস্থাও বেহাল। দুটি সড়কেরই সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এ কারণে ময়লা পরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহ নাগাদ পুনরায় ময়লা পরিবহন করা শুরু হবে। তখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান তিনি।