বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসটি পড়ে শেষ করেছেন কলেজশিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন। নতুন কোনো বই কেনার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। এর মধ্যে খবর পেয়েছেন চট্টগ্রামে বই বিনিময় উৎসব শুরু হয়েছে। তাই পথের পাঁচালীসহ নিজের পুরোনো বইগুলো তিনি নিয়ে এসেছেন বই বিনিময় উৎসবে।
চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি শিরীষতলায় আজ শনিবার শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী বই বিনিময় উৎসব। তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামে এ আয়োজন করেছে বইবন্ধু ও জেসিআই ঢাকা অ্যাস্পিরেন্টস। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে কথা হয় সুমাইয়া আফরিনের সঙ্গে। সুমাইয়া বলেন, পাঁচটি বই নিয়ে এসেছেন তিনি। বইগুলো গত বছর পড়ে শেষ করেছেন। এই বইগুলো জমা দিয়ে অন্য পাঁচটি বই নেবেন।
এর আগে সকাল ১০টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম দাউদুর রহমান। জেসিআই ঢাকা অ্যাস্পিরেন্টসের সহসভাপতি এস এম আবিদ উর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক বিদ্যুৎ বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল যুগে মানুষের মোবাইলের প্রতি আসক্তি বেড়েছে। তবে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা এখনো আছে। তাই যত বেশি বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে, মোবাইল আসক্তি তত কমবে।
উৎসব ঘুরে দেখা গেছে, ১৬টি স্টলে আটটি বিভাগে সাজানো রয়েছে কয়েক হাজার বই। শিশুতোষ, উপন্যাস, কবিতা, ধর্মীয়, একাডেমিক, প্রবন্ধ ও অন্যান্য, গল্প ও কিশোর উপন্যাস, রাজনৈতিক ইতিহাস এবং আত্মজীবনী—আটটি বিভাগে বই বিনিময়ের সুযোগ পাচ্ছেন বইপ্রেমীরা।
উৎসবে একজন বইপ্রেমী সর্বোচ্চ ১০টি বই বিনিময় করতে পারছেন। এর আগে মাঠে থাকা বুথে বই জমা দিয়ে একটি স্লিপ বা টোকেন নিতে হচ্ছে তাঁদের। এরপর টোকেন বা স্লিপটি নিয়ে নির্দিষ্ট বিভাগের টেবিল থেকে বই সংগ্রহ করতে পারছেন তাঁরা।
জানতে চাইলে বই বিনিময় উৎসবের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোছাইন প্রথম আলোকে বলেন, বিগত উৎসবগুলোয় প্রচুর বইপ্রেমীদের সাড়া পাওয়া গেছে। আশা করা হচ্ছে, এবার উৎসবে ২০ হাজারের কাছাকাছি বই বিনিময় হবে।
২০২১ ও ২০২৩ সালের পর এ বছর তৃতীয়বারের মতো বই বিনিময় উৎসব করছে বইবন্ধু। আগের বছরগুলোয় ১২ থেকে ১৫ হাজার বই বিনিময় হয়েছে।