চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সের সময়সীমা কমিয়ে তিন বছরে করার উদ্যোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকালে তাঁরা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শেষে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি সড়ক ও নগরের বটতলা এলাকায় মেজর এম এ জলিল সড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিভাগের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এক ঘণ্টা পর সড়ক থেকে শিক্ষার্থীরা সরে যান।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন বলেন, ‘১২ আগস্ট ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষক সম্মেলনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সের সময়সীমা কমিয়ে ৩ বছরে রূপান্তরের উদ্যোগের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যে উদ্বিগ্ন। এক অদূরদর্শীভাবে ডিপ্লোমা কোর্সের সময়সীমা হ্রাসের কথা ভাবা হচ্ছে। এতে করে আমরা সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হব।’
আরেক শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবি, অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করে ছাত্রদের ক্ষোভ নিরসন করবেন। শুধু আমরা না, সারা দেশের পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা এই উদ্যোগের কথা শুনে ক্ষুব্ধ। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে এমন বক্তব্য প্রত্যাশা করি না।’
সমাবেশে বক্তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে হটকারী আখ্যা দিয়ে বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ চলছে। এ ধরনের অদূরদর্শী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরে না এলে শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে যাবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যখন সরকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে শিক্ষার মূল স্রোতোধারায় নিয়ে আসার জন্য নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে, ঠিক সেই মুহূর্তে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রধানমন্ত্রীর মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করবে। যে কোর্স দীর্ঘ ১০ বছর বহু স্টাডি গবেষণা ও আলোচনা পর্যালোচনাপূর্বক চালু করা হয়েছে, দেশ–বিদেশে সমাদৃত সেই কোর্সকে ৩ বছরে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানান তাঁরা।
বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে তাদের যৌক্তিক এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে বলি। মানুষের দুর্ভোগ হয়, এমন কোনো কাজ না করার জন্য আহ্বান রাখি। শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে স্মারকলিপি প্রদানসহ অন্যান উপায়ে তাদের দাবি তুলে ধরার জন্য বললে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেয়। তবে আজ আবার একই দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে। পরে আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে নিয়ে এসেছি।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন। এতে কিছু সময় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।