নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের তখনকার সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সম্মেলনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মতিয়র রহমান খানকে সভাপতি ও মো. আশরাফ উদ্দিন খানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। প্রায় সাত বছর পর এই কমিটির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে আজ মঙ্গলবার দুপুরে। শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে সম্মেলন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
সম্মেলন ঘিরে জেলাজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই শীর্ষ দুই পদে কারা আসছেন, তা নিয়েই চলছে বেশি আলোচনা। সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে সম্মেলন স্থলসহ শহরের বিভিন্ন সড়ক তোরণ, ফেস্টুন আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে। সম্মেলনে যাঁরা আমন্ত্রিত অতিথি সেসব কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিনন্দন জানিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা এসব তোরণ, ফেস্টুন ও ব্যানার টাঙিয়ে রেখেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলন সফল করতে ১০টি উপজেলা ও ৮৬টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন। সম্মেলনে প্রায় দেখ লাখ নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটাতে চায় দলটি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশাল মাঠজুড়ে প্যান্ডেল তৈরির করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সম্মেলন স্থলে জড়ো হয়েছেন। কোনো কোনো সড়কে নেতাদের অভিনন্দন জানিয়ে ও প্রার্থী হতে চেয়ে এখনো ফেস্টুন-ব্যানার সাঁটানো হচ্ছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। উদ্বোধন করবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুর রাজ্জাকের। বিশেষ অতিথি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব উল আলম হানিফ। প্রধান বক্তা যুগ্ম সম্পাদক দীপু মনি। অতিথি বক্তা হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, মির্জা আজম ও শফিউল আলম চৌধুরী, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
জেলা কমিটির কয়েকজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু দিন ধরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নেতারা ঢাকায় অবস্থান করে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তবে কারা নেতৃত্বে আসছেন, সে বিষয়ে এখনো কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। ওই নেতারা মনে করেন, আগামী নির্বাচন অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আগামী নেতৃত্ব দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি মতিয়র রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান, সহসভাপতি আবদুন নূর খান, যুগ্ম সম্পাদক পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলামসহ অন্তত ছয়জনের নাম শোনা যাচ্ছে। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যুগ্ম সম্পাদক নূর খান, যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক প্রশান্ত কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক ভজন সরকার, শামছুর রহমানসহ অন্তত আটজনের নাম রয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে এখনো পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ, কেন্দুয়া ও আটপাড়া আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ আলী খান বলেন, ‘সম্মেলনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সম্মেলন সফল করতে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা রাত-দিন কাজ করছেন। আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এই দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবেই। তবে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। যাঁকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে, আমরা তাঁকেই মেনে নেব।’