সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা সিলমারা ব্যালটের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ সরকারের সেলফি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা সিলমারা ব্যালটের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ সরকারের সেলফি

নীলফামারী সদর

সিল মারা ব্যালটের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে দিলেন ছাত্রলীগ নেতা

নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ব্যালট পেপারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ সরকার।

আজ বুধবার সকালে গোপন বুথে ঢুকে তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমানের আনারস প্রতীকে ভোট দেন। নিজের মুঠোফোন দিয়ে সিল মারা ব্যালটের ছবি তোলেন।

পরে ব্যালটের একটি ছবি ও ব্যালটের সঙ্গে তোলা একটি সেলফি তিনি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’। মুহূর্তেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার সিল মারা ব্যালট পেপারের ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন জেনেছি, এটা দেওয়া ঠিক হয়নি। তখন তা তুলে নিয়েছি।’ তিনি ছবিটি মুছে দেওয়ার দাবি করলেও বেলা আড়াইটার সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় ছবিটি ফেসবুকে দেখা যায়। কথা বলার ২০ মিনিট পর ছবিটি আর পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভোটার বলেন, মাসুদ সরকার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ভোট দিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে। সেই ব্যালট পেপারের ছবি ফেসবুকে দিয়েছেন। দায়িত্বশীল পদে থেকে তিনি কাজটি ঠিক করেননি। এর মাধ্যমে তিনি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন।

ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ সরকারের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গোপন বুথে ক্যামেরা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ এটা করেন, তাহলে অপরাধ হবে। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।’

তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবুজার রহমান (আনারস), জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তী (ঘোড়া), জেলা ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি তপন কুমার রায় (হাতুড়ি) ও জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য তরিকুল ইসলাম (লাঙ্গল)।

১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৪১টি কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩৪ জন ভোটার আজ ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। বেলা দুইটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১৩ শতাংশ।