কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেত্রীসহ পাঁচজনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
আজ সোমবার বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।
এর আগে গতকাল রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নির্যাতনের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সেটি হাইকোর্টে পাঠানো হবে।
ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচজনকে এক বছরের জন্য একাডেমিক, আবাসিক বা অন্যান্য কার্যক্রম থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্য চার ছাত্রী হলেন হালিমা আক্তার, ইসরাত জাহান, তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান।
ওই ব্যবস্থা যথাযথ প্রক্রিয়ায় নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৮৭ সালের কোড অব কন্ডাক্টস অব দ্য স্টুডেন্টস (শিক্ষার্থী শৃঙ্খলাবিধি) অনুসরণ করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাঁচ শিক্ষার্থীর শাস্তি নিশ্চিতের নির্দেশ দেন। গত ২৬ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আদালত বলেছিলেন, আইন অনুসারে প্রথমে উপাচার্য শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। তিনি সন্তুষ্ট না হলে বা তুলনামূলক শাস্তি কম হলে তখন শৃঙ্খলা কমিটির কাছে বিষয়টি পাঠাবেন। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই শৃঙ্খলা কমিটি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত দেয়। এতে প্রক্রিয়াগত কিছু ত্রুটি আছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা আবাসিক হলের গণরুমে আটকে রেখে ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতন করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করার পর সারা দেশে আলোচনার জন্ম দেয়। ওই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইবির সাবেক শিক্ষার্থী গাজী মো. মহসীন রিট করেন।