সোয়া চার ঘণ্টা অবরোধের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল শুরু। আজ সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়
সোয়া চার ঘণ্টা অবরোধের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল শুরু। আজ সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়

সোয়া চার ঘণ্টা পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

সোয়া চার ঘণ্টা অবরোধের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ছেড়েছে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলসহ চার দাবিতে আন্দোলনরত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় তাঁরা এ অবরোধ তুলে নিয়ে আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করেছেন।

আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটা থেকে ফের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফ সোহেল। এর আগে আজ সোমবার দুপুর পৌনে তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক–সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে অবরোধ চলাকালে রোগীবাহিত অ্যাম্বুলেন্সগুলো ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধ তুলে নেওয়ার পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে কোটা বাতিলসহ চার দাবিতে আন্দোলন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতা আজ সোমবার ষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। একই দাবিতে গতকাল রোববার দুই ঘণ্টা, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ৩৫ মিনিট ও বুধবার পৌনে দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া গত সপ্তাহের সোমবার ১০ মিনিট ও মঙ্গলবার ২০ মিনিট সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন। ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।

শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো ২০১৮–এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফ সোহেল বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটা থেকে আমাদের অবরোধ চলবে। হামলা-মামলা করে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি না মানা হবে ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়ব না। এই আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, এখানে জামায়াত-বিএনপি ভর করার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ সুযোগ নিতে চায়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই তাদের নস্যাৎ করে দেবে।