বাস ধর্মঘটের পাশাপাশি খুলনায় শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী লঞ্চ ধর্মঘট। আজ শুক্রবার সকালে ১০ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ওই ধর্মঘট শুরু করেছে লঞ্চ শ্রমিক ইউনিয়ন। এর ফলে খুলনা থেকে দক্ষিণ দিকে (দাকোপ, কয়রা, সাতক্ষীরা) যাতায়াতের সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আগামীকাল শনিবার খুলনা মহানগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এর আগের দিন আজ শুক্রবার সকালে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ধর্মঘটের কারণ হিসেবে নছিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইকসহ সব অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবির কথা বলা হলেও বিএনপি বলছে, তাদের গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই এ ধর্মঘট।
বাংলাদেশ লঞ্চ শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, লঞ্চশ্রমিকদের বেতন বাড়ানো, ভৈরব থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত নদের খনন, ভারতগামী জাহাজের ল্যান্ডিং পাস দেওয়ার দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন যাত্রীবাহী লঞ্চের শ্রমিকেরা। প্রতিদিন খুলনা থেকে পাঁচটি লঞ্চ দক্ষিণ দিকে যায়। শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর খুলনা থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে না। তবে মালবাহীসহ অন্যান্য লঞ্চ ও নৌযান চলাচল করছে।
বিএনপির সমাবেশের আগে লঞ্চ ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অনেক আগেই ওই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য মালিক ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন না করায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। এর সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে বাসের পাশাপাশি লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে পাঁচটি লঞ্চ দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেকে লঞ্চঘাটে এসে লঞ্চ চলবে না দেখে ফিরে যাচ্ছেন।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই লঞ্চঘাটে এসেছিলেন অনুপ মণ্ডল। কয়রায় যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষা দিতে রাতেই কয়রা থেকে খুলনায় এসেছিলেন। রাতে ছিলেন এক আত্মীয়ের বাসায়। পরীক্ষা দিয়ে চলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু বাস চলাচল না করায় লঞ্চে কয়রায় ফিরে যাওয়া যাবে কি না, সে জন্য ঘাটে এসেছিলেন। এসে দেখছেন লঞ্চও বন্ধ।