ত্বকী হত্যার চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে
ত্বকী হত্যার চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে

শেখ হাসিনা ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে মাফিয়াদের রক্ষা করেছেন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাড়ে ১১ বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রেখে মাফিয়া-গডফাদারদের রক্ষা করেছেন বলে অভিযোগ নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বির। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার কারণে আজকে আবার বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শামীম ওসমান ও তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান জড়িত। তাঁদের বাদ দিয়ে তদন্ত শেষ করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে রফিউর রাব্বি এ মন্তব্য করেন। নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ১৩৯ মাস উপলক্ষে ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। প্রতি মাসের ৮ তারিখে ধারাবাহিকভাবে এই কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, বাসদের জেলা সদস্যসচিব আবু নাঈম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক হিমাংসু সাহা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহামুদ হোসেন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, ‘ত্বকী হত্যাকাণ্ডের সাত দিনের মাথায় নাসিম ওসমান ও আজমেরী ওসমানের যে টেলি-কথোপকথন প্রকাশিত হয়, সেখানে তাঁরা শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের কথা উল্লেখ করেছেন। আমরা শুরু থেকে বলে এসেছি শামীম ওসমান এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা। এ হত্যাকাণ্ডের যে কারণগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, তা সবই শামীম ওসমান–সংশ্লিষ্ট।’ রফিউর রাব্বি বলেন, ২০১৩ সালে র‌্যাবের তদন্তে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন ত্বকীকে হত্যা করেছে বলে উল্লেখ করেছিল। তদন্ত যেখানে থেমে গেল আজ তদন্ত শেষে ঘটনা সেখানেই থেকে গেলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে।