ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে পড়ছে। এতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি সড়কে পানি জমেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, আজ দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। চেল্লাখালী নদীর পানি ২১ দশমিক ৯৫ মিলিমিটার ও ভোগাই নদীর পানি ১ হাজার ৭১৪ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে নদী দুটির পানি বাড়তে শুরু করে। রাতে পানির তোড়ে পোড়াগাঁও, নয়াবিল, রামচন্দ্রকুড়া ও বাঘবেড় ইউনিয়নসহ পৌরসভার গড়কান্দা ও নিচপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়। এসব এলাকার বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, ভোগাই নদীর তীরবর্তী নয়াবিল শিমুলতলা, ঘাকপাড়া, মণ্ডলিয়াপাড়া, ভজপাড়া ও পৌরসভার গড়কান্দা ও নিচপাড়া–সংলগ্ন বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে কয়েক হাজার বাসাবাড়িতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ভোগাই নদীর বিভিন্ন অংশে বাঁধ উপচে ও পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে নালিতাবাড়ী পৌর শহর থেকে নয়াবিল, নালিতাবাড়ী বাজার থেকে ঘাকপাড়া যাতায়াত সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বারমারি, বাতকুচি, সন্ন্যাসীভিটা এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজিরখামার সড়ক। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাতকুচি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় গ্রামটির মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেছেন নালিতাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এ ছাড়া নন্নী-আমবাগান সড়ক, নন্নী-মধুটিলা ইকোপার্ক সড়ক, আমবাগান-বাতকুচি সড়ক চেল্লাখালী নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে।
নন্নী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো.আবদুল্লাহ বলেন, টানা বর্ষণ ও চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নন্নী ও পোড়াগাঁও ইউনিয়নের যাতায়াত সড়ক ডুবে আছে। এ ছাড়া নদীর পাড়ের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব দুর্গত বাসিন্দাদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
পানিবন্দী মানুষকে সরিয়ে আনতে চেষ্টা চলছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘উদ্ধার তৎপরতার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আমাদের সংগ্রহে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার আছে। শিগগিরই পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে এসব খাবার ও ত্রাণ সরবরাহ করা হবে।’