জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত থাকায় বিপাকে পড়েছেন শিউলি বেগম (৪০)। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তথ্যে তাঁর নামের সঙ্গে মৃত কথাটি যুক্ত করে দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহকারীরা। এ কারণে শিউলি বেঁচে থেকেও সব নাগরিক সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শিউলি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়বাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামীর নাম মো. আবির আকন্দ।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে নওগাঁর রানীনগর উপজেলায় ভোটার হালনাগাদ হয়। ওই সময় সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়বাড়িয়া গ্রামের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহবুবে সালাম খান। তিনি ওই গ্রামে তথ্য সংগ্রহ করেন। হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারের দেওয়া তথ্যে এবং ইউপি সদস্য শনাক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে ছয়বাড়িয়া গ্রামের শিউলির মৃত্যুর তথ্য ভোটার তালিকায় হালনাগাদ করা হয়। তখন থেকে শিউলি কাগজে–কলমে মৃত।
শিউলি বলেন, তিনি একজন দরিদ্র মানুষ। তাঁর পরিবার সরকারের দেওয়া ১০ টাকা কেজি চাল পেয়ে আসছেন। গত ছয় মাস আগে ডিলারের কাছে চাল নিতে গিয়ে তিনি আর চাল পাননি। এ সময় তাঁর চাল না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাঁর ভোটার আইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) অনলাইনে আসছে না বলে জানতে পারেন। এরপর তিনি উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তিনি মৃত এবং তাই তালিকা থেকে তাঁর নাম কর্তন হয়ে গেছে।
শিউলি বলেন, ভোটার তালিকায় নাম পুনর্বহালের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছি। নাম পুনর্বহাল করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এখনো কাজ হয়নি। এ ঘটনার দ্রুত সমাধান করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
আবির আকন্দ বলেন, তাঁর স্ত্রী জীবিত থাকার পরেরও যাঁরা ভোটার তালিকায় ভুল তথ্য দিয়ে মৃত বানিয়েছেন তদন্ত সাপেক্ষে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে ভোটার হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহকারী শিক্ষক মাহবুবে সালাম খান বলেন, ‘এটা ভুলবশত হয়ে গেছে। আমরা তাঁর নাম পুনর্বহাল করা চেষ্টা করছি।’
রানীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিউলির নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তন হয়েছে। তবে নাম পুনর্বহালের জন্য আবেদন করা হয়েছে।