কুষ্টিয়ায় গড়াই নদে দেখা দেওয়া কুমিরের বিষয়ে খোঁজ নিতে সেখানে গিয়েছিলেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। বুধবার দুপুরে সামাজিক বন বিভাগ কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার সেনগুপ্ত সেখানে যান। তিনি সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় সেখানে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া শাখার সহসভাপতি ও পাখিপ্রেমী শাহাব উদ্দিন মিলন উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, কয়েক দিন ধরে গড়াই নদের ভাটাপাড়া এলাকায় কুমির দেখছেন স্থানীয় লোকজন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের জুগিয়া ভাটাপাড়া গোরস্তান এলাকায় গড়াই নদের পাড়ে ভিড় করছেন মানুষ। বুধবারও সেখানে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ভিড় করেছিলেন।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা নদের পানির গভীরতা সম্পর্কে স্থানীয়দের কাছ থেকে ধারণা নেন। এ সময় কেউ কেউ কুমিরের একদিনে বেশ কয়েকবার দেখা মেলার বিষয়ে তথ্য দেন।
সামাজিক বন বিভাগ কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার সেনগুপ্ত বলেন, ভারত থেকে এসেছে এই কুমির। মাসখানেক আগে বন্যার পানিতে হয়তো কোনোভাবে এই কুমির পদ্মায় এসেছে। এরপর শাখা নদী গড়াই নদে চলে এসেছে। কেননা পদ্মার উৎসমুখ থেকে গড়াইয়ের এই এলাকাটা মাত্র এক কিলোমিটার হবে। স্থানীয় লোকজনের দেওয়া বর্ণনা ও দেখা ছবিমতে কুমিরটি মিঠাপানির উপযোগী। এ জন্য এই পানিতে থাকতে কুমিরটির কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি আরও বলেন, কুমিরের খাবারের কোনো সমস্যা হবে না। কাঁকড়া, ছোট ছোট মাছ, ঝিনুকসহ পানির ভেতর থাকা খাবার খেতে পারবে। তবে কুমিরটিকে বিরক্ত করলে সমস্যা হতে পারে। এ জন্য নদের পাড়ে উৎসুক জনতার ভিড় কমাতে বলা হচ্ছে। এ ছাড়া পানি কমছে। হয়তো পানির স্রোতের সঙ্গে সে চলে যেতে পারে।
নদের পাড়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করছিলেন খাদিমুল ইসলাম। তিনি বললেন, কুমির দেখতে প্রতিদিন বিকেলে প্রচুর মানুষ জমায়েত হচ্ছে। বিকেলে তিন থেকে চারজন ব্যক্তি সেখানে অস্থায়ী দোকান বসাচ্ছেন।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া শাখার সহসভাপতি ও পাখিপ্রেমী শাহাব উদ্দিন বলেন, কুমিরকে উৎসুক জনতা যাতে বিরক্ত না করতে পারে, এ জন্য নির্দেশনামূলক লেখা সাইনবোর্ড নেওয়া হচ্ছে। নদের পাড়ে কয়েকটি স্থানে স্থাপন করা হবে। কুমির যাতে অবাধে বিচরণ করতে পারে, এ ব্যাপারে খোঁজ রাখা হবে।