ঘূর্ণিঝড় রিমাল: সুন্দরবনে ৫ দিনে হরিণসহ ৫৬টি মৃত প্রাণী উদ্ধার

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানিতে প্লাবিত হয় গোটা সুন্দরবন। বনের বিভিন্ন স্থানে হরিণসহ প্রাণীর মরদেহ পাওয়া যাচ্ছে
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলে আঘাত হানার ৫ দিনে সুন্দরবন থেকে হরিণসহ ৫৬টি মৃত প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত হিসাব এটি। এর মধ্যে ৫৪টি হরিণ ও ২টি শূকর। মৃত বন্য প্রাণীগুলোকে কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া এই সময় ভেসে যাওয়া ১৭টি আহত হরিণ উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মিহির কুমার দো বলেন, উচ্চ জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহিনে চলে যাওয়ায় হরিণগুলো ভেসে গিয়ে সাঁতরে কূলে উঠতে পারেনি। এ কারণে হরিণগুলো মারা যেতে পারে বলে ধারণা বন বিভাগের। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এই জোয়ারের উচ্চতা ছিল ১০ থেকে ১২ ফুট।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের মতো সুন্দরবনের বন্য প্রাণীরাও প্রকৃতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়। পানি তাদের কাছে নতুন কিছু নয়। তারা নিয়মিত দিনে দুবার জোয়ার–ভাটা দেখে অভ্যস্ত। এ ছাড়া অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে ভরা কটালের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি থাকে। দুর্যোগের সময় যখন তীব্র ঝড় ও পানির উচ্চতা অনেক বেশি হয়, তখন হয়তো তাদের টিকে থাকা অনেক কষ্টকর, তবু তারা বছরের পর বছর সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পান, ইয়াস, মোখা, নার্গিস, রিমালসহ বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। শুধু দরকার সুন্দরবনের সুরক্ষা। তাহলেই যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, শিগগিরই উদ্ভিদ ও প্রাণীরা কাটিয়ে উঠতে পারবে।