পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মদের প্রত্যাহার চেয়েছেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি ওসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে অবিলম্বে তাঁর প্রত্যাহার চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আজ বুধবার লিখিত আবেদন করেছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবুর রহমান কলাপড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। সেবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এই আসনের সংসদ সদস্য হন মহিব্বুর রহমান ওরফে মহিব। এবারও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন মহিব্বুর। মাহবুবুর দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদনে মাহবুবুর রহমান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কলাপাড়া থানার ওসির কর্মকাণ্ডে কমিশন প্রতিশ্রুত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নষ্ট হতে চলছে। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল উপলক্ষে তাঁর বাসভবনে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন। এর আগে ২৯ নভেম্বর সারা রাত উপজেলাব্যাপী তাঁর কর্মী-সমর্থকদের বাসাবাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হামলা চালান। এ ঘটনা ওসিকে জানালে তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো পরোক্ষভাবে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টিতে সহায়তা করেন।
মাহবুবুর রহমান অভিযোগ করেন, ৩০ নভেম্বর সকাল থেকেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা কর্মী-সমর্থকদের ওপর বর্তমান সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমানের সমর্থকেরা শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা হামলা করেন। তাঁর দুজন কর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এ ছাড়া দুই শতাধিক কর্মীকে লাঠিপেটা করে আহত করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে কালক্ষেপণ করে থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়নি। এতে জনমনে সংশয় ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি আলী আহম্মদ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি (স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর) যেসব অভিযোগ দিয়েছেন, তা আমার জানা নেই। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী এসব বিষয়ে আমার সঙ্গে আলাপও করেননি। অভিযোগগুলো কমিশন তদন্ত করে দেখলেই সত্য না মিথ্যা তার প্রমাণ মিলবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান কর্মিসভার আদলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি জনসভা করেছেন। এমনকি প্রতিটি ইউনিয়নে ৩৫ থেকে ৪০টি মোটরসাইকেলে মহড়া চালান। এসব বিষয়ে ওসিকে জানালেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এ পরিস্থিতিতে কলাপাড়া থানার ওসিকে বদলি না করলে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে এবং ভোটাররা কেন্দ্রবিমুখ হয়ে পড়বেন।