রাজবাড়ীতে কলেজছাত্র তানভীর শেখের (২০) হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে নিহত তানভীর শেখের পরিবারসহ সহপাঠী, বন্ধু ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়কের রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের পান্নাচত্বর হয়ে রেলগেট এলাকা ঘুরে জিলা স্কুলের সামনে এসে প্রধান সড়ক আটকে অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা তানভীর হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারসহ ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, পুলিশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তানভীরের হত্যাকারী সব আসামির গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিলেও এখনো সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এর প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার বড় পরিসরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নিজ বাসা থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে শহরের বিনোদপুর এলাকায় সর্বজনীন মন্দির ও স্থানীয় মুন্নাফের দোকানসংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন তানভীর মিয়া। এ সময় আকস্মিকভাবে ১০-১২ জন তরুণ চারদিক থেকে ঘিরে বন্ধুদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তানভীরকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পেটে ও পিঠে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করলে তানভীর মাটিতে পড়ে যান। এ সময় তাঁদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন তানভীরকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। হাসপাতালে পাঠানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তানভীর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বিনোদপুর এলাকার বাবু শেখের ছেলে। রাজবাড়ী ডা. আবুল হোসেন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
এর আগে তানভীরের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নানের পদত্যাগ দাবি করা হয়। ওই দিন রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শেষে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে এ দাবি জানান। এ সময় শিক্ষার্থীরা তানভীর শেখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন সহযোদ্ধা ছিলেন বলে জানান।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৩ নভেম্বর তানভীরের মামা আলম শেখ বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করাসহ ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, তানভীর হত্যায় এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।