গাজীপুরে আতঙ্ক নিয়ে শিল্প কারখানা খুলেছে কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার সকাল থেকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিতে দেখা যায় শ্রমিকদের। এর মাধ্যমে ছয় দিন পর রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে যাথারীতি কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকেরাও শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। এখন দিনটা ভালো যায় কি না, সেটিই দেখার বিষয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিলে পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে সরকার নিম্নতম মজুর বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব করেন। এর বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। পরদিন গত ২৩ অক্টেবর থেকেই মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিচালা এলাকায় শ্রমিকেরা আন্দোলন শুরু করে। পরবর্তী সময়ে আশুলিয়া ও সাভারে শ্রম অসন্তোষ ছড়ালে সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয় কলকারখানা।
গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনের সময় গাজীপুরের তিনটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি, সফিপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্স, গাজীপুরের ভোগড়া এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তবে আগের মতোই এখনো জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিজিবি সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ বলছে, আজ সকালে জেলার সব কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজে যোগ দিয়েছেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোথাও কোনো অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরে ভোগড়া এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানার প্রশাসনিক কর্মকার্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা কিছুটা ভয় নিয়েই কারখানা চালু করেছি। শ্রমিকদের মধ্যেও কাজ করার একটা আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আশা করছি আর কোনো সমস্যা হবে না।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা খোঁজ খবর রাখছেন। বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো ঝামেলার খবর পাওয়া যায়নি।