মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার সৈয়দপুর আবদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম রুমিয়া সরকার। তিনি বিদ্যালয়টির বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন রুমিয়া সরকার। ক্লাসের ৯ শিক্ষার্থীর মাথায় ওই সময় হিজাব ছিল না। রুমিয়া ওই শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। সে সময় তিনি ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই কাঁচি নিয়ে চুল কেটে দেন।
এক ছাত্রী বলে, ‘আমার একটাই হিজাব ছিল। ওই হিজাবটা ময়লা হয়ে যাওয়ায় ধুয়ে দিয়েছিলাম। এ জন্য পরে যেতে পারিনি। ম্যাডামকে অনেক অনুরোধ করেও রক্ষা পাইনি। ম্যাডাম আমাদের চুল কেটে দিল।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের এক অভিভাবক বলেন, হিজাব না পরায় এভাবে চুল কেটে দেওয়া অন্যায় হয়েছে। তাঁর মেয়ে গতকাল খুব কান্নাকাটি করছে। স্কুলে আসতে চাচ্ছে না।
এ বিষয়ে শিক্ষক রুমিয়া সরকারকে ফোন দিলে তিনি ধরেননি। সৈয়দপুর আবদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিয়া মো. ফরিদ এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। তাঁর বিদ্যালয়ে কারও হিজাব পরা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ চাইলে তা পরতে পারে। ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষক কাঁচি কোথায় পেলেন, জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছেই ছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, ওই শিক্ষকের বিষয়ে স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নয়জনের মধ্যে চার শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। সকাল ১০টার দিকে এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্কুল কমিটির লোকজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। এমন ঘটনা কারও কাম্য নয়।