মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার প্রতিবাদ সমাবেশ। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাবের সামনে
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার প্রতিবাদ সমাবেশ। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাবের সামনে

‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার দাবি’

কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান।

‘কোটা আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকার প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিটির উদ্যোগে এ সমাবেশ আহ্বান করা হয়। সমাবেশে পাঁচ দফা দাবিনামা পেশ করেন সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমর ফারুক।

দাবির মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়ে কটূক্তিকারীদের ১০ দিনের মধ্যে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা, সুরক্ষা আইনের আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা, কোটার মাধ্যমে ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কতজন বীর মুক্তিযোদ্ধা চাকরি পেয়েছেন এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কতজন সন্তানের চাকরি হয়েছে, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং রাজাকারের তালিকা প্রকাশ অন্যতম।

মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কোটা সংস্কারের আন্দোলন যে কেউ করতে পারবেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কোটার নামে মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ছাত্ররা যা ইচ্ছে তা বলবে, তা হয় না। আমরা এখনো বেঁচে আছি। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তা মেনে নেব না।’

মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আন্দোলন করুন, আপত্তি নেই। মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী, জানুন এবং সেই চেতনা বাস্তবায়নে আপনারা আন্দোলনে নামেন। এই দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চলছে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো একটা শোষণহীন সমাজব্যবস্থা করা, সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন করা, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদান করা। কিন্তু এটা হয়নি। এগুলো হলে স্বাধীনতাবিরোধী পক্ষ আস্ফালন দেখাতে পারত না।’

মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারীদের যে বক্তব্য দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে, এমন একটা শক্তি তাদের মধ্যে আছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এখনো মেনে নেয়নি। যারা মেনে নেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আহ্বায়ক সাহেদ মুরাদের সভাপতিত্বে এবং মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল হক চৌধুরী, সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, আবদুর রাজ্জাক, ইদ্রিস আলী, শাহ আলম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, সিটি করপোরেশনের নারী কাউন্সিলর শাহীন আক্তার, আওয়ামী লীগ নেতা নওশাদ মাহমুদ, নাজিম উদ্দীন, যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান, সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সরওয়ার আলম চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজিম নূর সোহাদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক মশিউজ্জামান সিদ্দিকী, মহানগর শাখার সদস্যসচিব কাজী রাজিশ ইমরান প্রমুখ।