পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার সাজেদুল ইসলামের গ্রামে নতুন বাড়ি করার কাজ শুরু হয়েছিল। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর বাটা ইউনিয়নের মধ্যম চর বাটা গ্রামে
পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার সাজেদুল ইসলামের গ্রামে নতুন বাড়ি করার কাজ শুরু হয়েছিল। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর বাটা ইউনিয়নের মধ্যম চর বাটা গ্রামে

পিএসসির কর্মচারী সাজেদুল এক একরে পাকা বাড়ির কাজ শুরু করেছিলেন

রেলওয়ের একটি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ জনের একজন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের মধ্যম চরবাটা গ্রামে।

গতকাল বুধবার সাজেদুল ইসলামের মধ্যম চরবাটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে পৈতৃক একটি পুরোনো টিনের ঘর ছাড়া তেমন কিছু নেই। বাড়ির বাসিন্দা সাজেদুলের মামা মো. আবুল হাসেম বলেন, সাজেদুলের বাবা শামছুল আলম মারা গেছেন প্রায় পাঁচ বছর আগে। তিনি সরকারি অফিসের গাড়িচালক ছিলেন। তবে কোন অফিসের, তা তাঁরা জানতেন না। পরিবার নিয়ে সব সময় ঢাকায় থাকতেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। গ্রামে খুব বেশি সহায়-সম্পদ তাঁদের নেই।

সাজেদুলদের বাড়িতে তাঁরা ছাড়া আরও ছয় থেকে সাতটি পরিবারের বাস। সাজেদুলদের পুরোনো ঘরে তাঁর মামাতো ভাই পরিবার নিয়ে থাকেন। কয়েক বছর আগে সাজেদুল বাড়ি থেকে কয়েক শ গজ দূরে রবির দোকান এলাকায় এক একর জমিতে পৃথক বাড়ির করার জন্য মাটি ভরাট করেছেন। সেখানে পাকা বাড়ি করবেন। রোজার ঈদের পর ওই জমির চার পাশে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।

ওই নতুন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উত্তর পাশে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ শেষ পর্যায়ে। বাড়ির সামনে স্তূপ করে রাখা আছে ইট-বালু। সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে একটি মাদ্রাসা। ওই মাদ্রাসার প্রধান গিয়াস উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার পাশের ওই বাড়ির মালিক ঢাকায় কোনো এক মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন বলে তিনি শুনেছেন। আর এখন শুনছেন, তিনি চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আশপাশের বাসিন্দাদের ভাষ্য, ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সাজেদুলরা মাঝেমধ্যে গ্রামে আসতেন। কিছুদিন আগে সাজেদুল ইসলামের সুবাদে তাঁর বোন ও ভগ্নিপতির সরকারি চাকরি হয়েছে।

তবে প্রথম আলো সাজেদুলের বোন ও ভগ্নিপতির সরকারি চাকরি পাওয়ার তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি।

সাজেদুলের মামা আবুল হাসেম বলেন, এখন সাজেদুলদের যে পুরোনো বাড়ি, সেটি সাজেদুলের নানার বাড়ি। শ্বশুরের কাছ থেকে জায়গা কিনে এখানে বসতি গড়েছিলেন সাজেদুলের বাবা শামছুল আলম। সাজেদুলরা দুই ভাই ও দুই বোন। সাজেদুল ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে সরকারি চাকরি করেন। নিজেদের বাড়ির একটা ছেলে এমন কাজ করতে পারেন, এটা তিনি ভাবতে পারছেন না। সাজেদুলের বাবা শামছুল আলমকে সবাই ভালো মানুষ হিসেবে জানতেন।

চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার সাজেদুল ইসলামকে তিনি চিনতেন না। সাজেদুল ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এলাকায় খুব একটা যাতায়াত নেই। তাঁদের বাড়িতে কেউ থাকেন না।