ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সমাবেশে হামলা ও গুলি করে ছাত্র হত্যা মামলার দুজন পলাতক আসামিকে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাঁদের মধ্যে ফেনী পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন ওরফে অমিকে (২৪) গতকাল শনিবার রাতে শহরের শাহীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। একই দিন সন্ধ্যায় ছাগলনাইয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম ওরফে বাচ্চুকে (৪৯) ছাগলনাইয়া পৌর শহরের অটোরিকশা স্ট্যান্ডের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করেছে ছাগলনাইয়া থানার পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট সকালে ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে। ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন ছাগলনাইয়া আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের অনার্স শ্রেণির ছাত্র ও সোনাগাজীর চর চান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাহাবুবুল হাসান (২৫)। সেখানে গুলিবিদ্ধ ও মারধরের শিকার হয়ে তিনি মারা যান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফেনী সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র–জনতার বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে ও হামলা চালায়। মাহবুবুল হাসান সেখানে গুলিবিদ্ধ ও মারধরের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৭ আগস্ট তিনি চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
ওই ঘটনায় মাহাবুবুল হাসানের ভাই বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগ নেতা ইসমাইল হোসেনকেও আসামি করা হয়।
অন্যদিকে গত ৪ আগস্ট একই দিন একই সমাবেশে হামলার ঘটনায় নিহত ওয়াকিল আহম্মদ (১৭) নামের এক তরুণ নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর মা মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে ফেনী সদর মডেল থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ছাগলনাইয়া থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি স্থানীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম ওরফে বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করে।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, দুটি পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।