‘মাসিক বা ঋতুস্রাব মেয়েদের স্বাভাবিক একটি বিষয়। বিষয়টি নিয়ে সংকোচ, জড়তা বা লুকিয়ে রাখার কিছু নেই। মাসিকের সময় নারীদের অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সচেতনতা খুব জরুরি।’
মাসিক বা ঋতুস্রাব নিয়ে ‘৪০ টাকায় জীবন বাঁচান’ শিরোনামের সচেতনতামূলক একটি কর্মসূচিতে এ কথা বলে ১৪ বয়সী খুদে ইংরেজি শিক্ষক সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার উম্মে মাইসুন। তরুণদের আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যাওয়ারনেস-৩৬০–এর আয়োজনে গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ১ নম্বর ঝিল এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ছিল মাসিক নিয়ে আলোচনা, মাসিকের সময় করণীয়, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির নানা দিক ও অভিজ্ঞতা বিনিময়। এতে ৩৫ জন কিশোরী অংশ নেয়। কর্মসূচি পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করে উম্মে মাইসুন।
মাইসুন তার সূচনা বক্তব্যে বলে, ‘মাসিক নিয়ে সমাজের প্রচলিত কিছু ট্যাবু আমাদের এ সম্পর্কে আরও ভীতিকর করে তোলে। এমনকি ঘরের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা, এ নিয়ে কারও সঙ্গে কিছু আলোচনা না করা, কত কিছু যে হয়। তার ওপর স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার না করে পুরোনো কাপড় ব্যবহার করা। এতে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
আলোচনায় মাসিকের সময় নারীস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং জটিলতা এড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেন আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক তানজিনা রহমান ঊর্মি। তিনি বলেন, ‘আমরা জীবনযাপনের জন্য হাজার কষ্ট করে হলেও নানা কিছুতে খরচ করি। তাই পরিবারের কিশোরীটিকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারব না? বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের স্যানিটারি প্যাড পাওয়া যায়। এখন বাজারে ৪০ টাকায়ও স্যানিটারি প্যাড পাওয়া যায়। প্যাড না হলে অন্তত যেন পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করি।’
কাপড় ব্যবহারের ক্ষেত্রে চিকিৎসক তানজিনা বলেন, কাপড় অবশ্যই নতুন এবং ব্যবহারের পর ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে। স্যাঁতসেঁতে কাপড় ব্যবহারে জীবাণু সংক্রমণ হয়ে জরায়ু ক্যানসার, বন্ধ্যত্ব, প্রস্রাবের প্রদাহসহ নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে।
সভায় মাসিক নিয়ে কিশোরীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন চিকিৎসক। পরে কিশোরীদের হাতে স্যানিটারি প্যাডসহ নানা সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।