মমিন মণ্ডল (৪৫) ও হাসেম শেখ (৪০) সম্পর্কে ভায়রা ভাই। মঙ্গলবার ঢাকায় নিজেদের পালিত দুটি ষাঁড় ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তাঁরা। সেই টাকা নিয়ে বুধবার সকালে রাজবাড়ীর কালুখালীতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরিতে ওঠার পর অজ্ঞানপার্টির লোকজন তাঁদের অচেতন করে সব টাকা নিয়ে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মমিন মণ্ডল রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাতটা গ্রামের বাসিন্দা। আর হাসেম শেখ একই উপজেলার পাড়া বেলগাছি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের আজ বুধবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাটের রো রো (বড়) এনায়েতপুরী ফেরি থেকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলার ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে নৌ পুলিশ। সন্ধ্যায় তাঁরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি যান।
ভুক্তভোগীদের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজেদের লালন করা দুটি ষাঁড় গত সোমবার ছোট ট্রাকে করে বিক্রির জন্য ঢাকায় নেন মমিন মণ্ডল ও হাসেম শেখ। মঙ্গলবার রাতে সেগুলো ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এরপর বুধবার ভোরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়ে সকাল ৬টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে রো রো ফেরি এনায়েতপুরীতে ওঠেন তাঁরা। ফেরির ছাদে বিশ্রামে থাকা অবস্থায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা কৌশলে তাঁদের পানি খাওয়ান। এ সময় মমিন মণ্ডলের কাছে থাকা ১ লাখ ২৫ হাজার এবং হাসেম শেখের কাছে থাকা ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে যান অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা। সকাল ৭টার দিকে ফেরিটি দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছালে অচেতন অবস্থায় তাঁদের পড়ে থাকতে দেখে ফেরির লোকজন দৌলতদিয়া নৌ পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে নৌ পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তাঁদের মুঠোফোনে বাড়ি থেকে কল আসায় পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পুলিশ খবর দিলে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে যান।
হাসপাতালে থাকা মমিন মণ্ডলের স্ত্রী জাহেদা বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদ উপলক্ষে অনেক কষ্ট ও যত্ন করে ষাঁড়টি পালন করেছিলাম। গরুটি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল। এখন তো আমাদের সবই চলে গেল।’
দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, অপরাধীদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।