সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নান। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। সাদাত মান্নানসহ এখানে চেয়ারম্যান পদে মোট চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা।
এম এ মান্নান সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসন থেকে টানা চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। এখন এই আসনে নিজের ছেলেকে রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে তিনি তৈরি করছেন বলে আলোচনা চলছে।
দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আলোচনা শুরু হলে এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নানের প্রার্থিতার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এলাকার বিভিন্ন ছোটখাটো কর্মসূচি এবং গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। এম এ মান্নান নিজে বিভিন্ন সভায় ছেলেকে পরিচয় করিয়ে দেন। এতে দলের অন্য যাঁরা প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলেন, তাঁরা বেজার হন। এদিকে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের স্বজনদের প্রার্থী না হওয়ার বিষয়ে ঘোষণা দিলে সাদাত মান্নান কিছুদিন নীরব ছিলেন। এ সময় তাঁরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু পরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বজনেরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার খবর আসে। মনোনয়নপত্র জমাদানের কয়েক দিন আগে আবার সক্রিয় হন সাদাত মান্নান। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।
চতুর্থ ধাপে আগামী ৫ জুন এখানে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল গতকাল ৯ মে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে আজ শুক্রবার বিকেলে সাদাত মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুগত থেকেই রাজনীতি করছি। এক বছর আগে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য দলের নেতা-কর্মী ও এলাকার মুরব্বিরা আমাকে বলেন। সেই থেকে আমি মাঠে আছি।’ দলীয় নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দলের নীতি-আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি কাজ করছি। দেখা যাক কী হয়।’ এর বেশি তিনি আর বলতে চাননি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া অন্যরা হলেন এই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুর রহমান, শান্তিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজছাত্র সংসদের সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) বোরহান উদ্দিন ওরফে দোলন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফারুক আহমদ। বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করায় তিনি প্রার্থী হননি। চতুর্থ ধাপে আগামী ৫ জুন এখানে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১২ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৩ থেকে ১৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২০ মে।