আওয়ামী লীগের কার্যালয় করতে জেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে ইজারা নেওয়া জমির গাছ কাটা হয়েছে। আজ বুধবার রাজশাহী নগরের রানীবাজার এলাকায়
আওয়ামী লীগের কার্যালয় করতে জেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে ইজারা নেওয়া জমির গাছ কাটা হয়েছে। আজ বুধবার রাজশাহী নগরের রানীবাজার এলাকায়

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় করতে অর্পিত সম্পত্তির গাছ কর্তন

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় করার জন্য অর্পিত সম্পত্তির গাছ কাটার ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী নগরের রানীবাজার এলাকায় এই অর্পিত সম্পত্তি ইজারা নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজ বুধবার দুপুরে সেই সম্পত্তির ছয়টি গাছ কাটা হয়েছে। নিয়মে থাকলেও বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়নি।

ওই অর্পিত সম্পত্তি ইজারা নেওয়ার পর পুরোনো একটি পাকা ভবন গত সেপ্টেম্বর মাসে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এবার ছয়টি গাছও কেটে ফেলা হলো। গাছগুলোর মধ্যে দুটি আমগাছ, দুটি আমড়াগাছ ও দুটি নারকেলগাছ ছিল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অসীম কুমার প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় কার্যালয় করার জন্য জায়গাটি ইজারা নিলেও অস্থায়ী স্থাপনা ছাড়া অন্য কিছু করতে পারবে না। আর ওই সম্পত্তির গাছ কাটতে হলে অবশ্যই নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। বিষয়টি তাঁরা অবগত নন। তাঁরা এখন খতিয়ে দেখবেন কীভাবে গাছ কাটা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের কার্যালয় করতে জেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে ইজারা নেওয়া জমির গাছ কাটা হয়েছে। আজ বুধবার রাজশাহী নগরের রানীবাজার এলাকায়

নগরের রানীবাজার এলাকায় অবস্থিত এই জমির পরিমাণ ১৪ শতক। এতে পরিত্যক্ত একটি ভবন ছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে এই বাড়ির দেয়ালে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলা শাখার কার্যালয়’ লেখা একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। তখন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্পত্তিটি জেলা প্রশাসন থেকে একসনা ভিত্তিতে ইজারা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর এই ইজারা মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এই শর্তে ইজারা নিয়ে তারা ভবনটি ব্যবহারের জন্য পরিষ্কার করেছিল। হঠাৎ গত ৫ সেপ্টেম্বর এই ভবন ভাঙা হয়। সে সময় জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকে এর তদারকিও করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে কথা বলার জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে এর আগে ঘর ভাঙার সময় তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ইজারা নেওয়ার সময় যে শর্ত দেওয়া রয়েছে, তার মধ্যে ভাঙার বিষয়টিও রয়েছে। ভবন একেবারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। গায়ের ওপর ইট খুলে পড়ছিল। এখন তাঁরা সেই ইট দিয়ে একটি অস্থায়ী কার্যালয় করবেন। সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় করার জন্য ২০১৭ সালে শহরের সিটিহাট এলাকায় একখণ্ড জমি দিয়েছিলেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হক। সেখানে একটি ভবনও করা হয়েছে। এনামুল হক এর আগে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সাধারণত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় শহরতলিতে ভালো হয়। তিনি যেখানে জায়গা দিয়েছেন, সেটাই উপযুক্ত। যাঁরা অর্পিত সম্পত্তিতে কার্যালয় করতে যাচ্ছেন, তাঁরা মূলত রাজনৈতিক একটা ‘জেলাসি’ (ঈর্ষা) থেকেই এটা করছেন। তাঁর জানামতে, জেলা প্রশাসন কোনো দলকে কার্যালয় করার জন্য জমি দিতে পারে না। হয়তো কোনো ব্যক্তির নামে দিয়েছে।