কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় সালিস চলাকালে এক ব্যক্তিকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটা স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে আজ রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন (৩৬)। তিনি দরবেশকাটা এলাকার আবু তাহেরের ছেলে। স্থানীয় লোকজন বলেন, ছয় মাস আগে আনোয়ার হোসেনের স্ত্রীকে আহত করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান আহমদ সালিস ডেকে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। এরপর থেকে এলাকার লোকজন বিষয়টি নিয়ে আনোয়ারকে নানা কটু কথা বলতেন।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে আয়াজ উদ্দিন (২২) আনোয়ার হোসেনকে দেখে কটু কথা শোনান। আনোয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সুলতান আহমদকে এ বিষয়ে বিচার দেন।
সুলতান আহমদ রাত ১২টার দিকে দরবেশকাটা স্টেশনের একটি কামারের দোকানে আবদুল আজিজ ও আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে সালিসে বসেন। এ সময় তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আবদুল আজিজ কামারের দোকান থেকে ছুরি নিয়ে আনোয়ার হোসেনের কোমরে ও লাঠি দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করেন।
স্থানীয় লোকজন আনোয়ারকে উদ্ধার করে একজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আনোয়ার হোসেনের শরীরে ছুরির দুটি আঘাত রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তবে ইউপি সদস্য সুলতান আহমদ সালিস ডাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আয়াজ উদ্দিন উত্ত্যক্ত করেন আনোয়ারকে। এ সময় আনোয়ার বিষয়টি তাঁকে জানান। বিষয়টি তিনি আয়াজের বাবা মোহাম্মদ এনামকে জানান। এনাম সব শুনে আয়াজকে শাসন করেন। আয়াজ এ ক্ষোভ থেকে আনোয়ারকে ছুরিকাঘাত করেন। তিনি কোনো সালিস ডাকেননি।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল জব্বার বলেন, রোববার বেলা একটা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি নিহত ব্যক্তির পরিবার। তবে পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করছে।