দল বেঁধে দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন পদ্মবিলে। কেউ কেউ তুলে নিচ্ছেন দু-একটা পদ্ম ফুল। যাতায়াতব্যবস্থা অত ভালো না হওয়ার পরও পদ্ম ফুলের সৌন্দর্যে ছুটে যান দর্শনার্থীরা। কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দড়ি জাহাঙ্গীরপুর এলাকায় অবস্থিত কাইনহা বিল এখন পদ্মবিল নামে পরিচিত।
সম্প্রতি পদ্মবিলে গিয়ে দেখা যায়, বিলপাড়ে রয়েছে কয়েকটি ছোট ডিঙিনৌকা। এগুলো দিয়ে ফুলপ্রেমীদের বিলে ঘুরিয়ে আনা হয়। এক নৌকায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় আধা ঘণ্টা ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে নৌকায় দু-তিনজনের বেশি মানুষ উঠতে পারেন না। স্থানীয় অনেকেই নৌকা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন। পাশাপাশি অনেকে হেঁটে যত দূর সম্ভব বিলপাড়ে গিয়ে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে ফিরে যান।
জেলার করিমগঞ্জের নিয়ামতপুর হাজীবাড়ি এলাকা থেকে পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা মো. উবায়েদ উল্লাহ নামের একজন বলেন, ‘আমি এই বিলে ফুটে থাকা পদ্ম ফুল দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। তবে ভালো লাগার পাশাপাশি একটু খারাপও লাগছে। অনেক দর্শনার্থী বিলে নেমে ফুল তুলে আনছেন। যদি পদ্ম ফুল ফোটার সময় বিল সংরক্ষণ করা যেত, তাহলে দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্য আরও বেশি উপভোগ করতে পারতেন।’
মো. আলমগীর হোসেন নামের একজন বলেন, তিনি একটি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সংগঠনের বেশ কয়েকজন মিলে পদ্মবিলে বেড়াতে এসেছেন। একসঙ্গে শত শত পদ্ম দেখে তাঁদের ভালো লেগেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, তাড়াইলের দড়ি জাহাঙ্গীরপুর কাইনহার বিলকে দু-তিন বছর ধরে পদ্মবিল বলে ডাকছেন স্থানীয় লোকজন। দূর থেকে মনে হয় যেন ফুলের বিছানা পেতে রাখা আছে। প্রতিদিনই সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন দর্শনার্থীরা। বর্ষাকালে এই বিলের অধিকাংশ জমিতে প্রাকৃতিকভাবে পদ্ম ফুল জন্মে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গোলাপি রঙের পদ্ম ফুল দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। তবে খারাপ লাগে, লোকজন যখন পদ্ম ফুল ছিঁড়ে নষ্ট করেন।
তাড়াইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁঞা বলেন, বিল-জলাশয় ভরাট করে ফেলার কারণে পদ্ম ফুল বিলুপ্তির পথে। তবে এই পদ্মবিলে কয়েক বছর ধরে পদ্ম ফুল ফুটছে। এই পদ্মবিল সংরক্ষণের বিষয়ে তাঁদের পরিকল্পনা আছে। দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের যাতে বিলপাড়ে যেতে কষ্ট না হয়, সে জন্য কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।