রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশের আগে রাজপথে আ.লীগের শক্তির মহড়া

বিএনপির গণসমাবেশের আগে রাজশাহীতে মহানগর আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলে কয়েক হাজার নেতা–কর্মী অংশ নেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের সাহেববাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে রাজপথে শক্তির মহড়া দিল মহানগর আওয়ামী লীগ। ওয়ার্ড ও থানা পর্যায় শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নগরের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে। কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, বিএনপির কর্মসূচি থেকে ‘অশান্তি’ সৃষ্টি করা হলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

আজ বুধবার বেলা তিনটা থেকে নগরের কুমারপাড়া এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন। বিকেল চারটার মধ্যে সেখানে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে। এতে এলাকায় দুটি রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। জনসমাগম একপর্যায়ে নগরের আলুপট্টি থেকে সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে যায়। এরপর সোয়া চারটার দিকে মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরের ফায়ার সার্ভিস মোড়, ঘোষপাড়া, মালোপাড়া, বাটার মোড় হয়ে সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে পথসভায় মিলিত হয়।

আপনারা এখন আন্দোলন করছেন, আপনারা একটা দর-কষাকষি করতে চান। আমরা বুঝি। আপনাদের কিছু বেশি সিট লাগবে। এটি আপনাদের দর-কষাকষি। সংসদে পাঁচজন নিয়ে খুব কষ্টে আছেন।
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য

সেখানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। পথসভায় সমাপনী বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। সঞ্চালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার।

বিজয়ের মাসের প্রথম দিনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ আরেকটি ইতিহাস করল উল্লেখ করে খায়রুজ্জামান বলেন, ‘একটি বিশালতর বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে আসল। মিছিলের শেষ মাথা এখনো আসছে। আমার তো মনে হয় এই মানুষগুলোকে মাদ্রাসা মাঠে ঢোকালে মাঠটি বোধ হয় ভরপুর হয়ে যায়। যেটার জন্য বিএনপি আজ কত দিন ধরে ঢাকঢোল বাজিয়ে রাজশাহীর আটটি জেলা থেকে ভাড়া লোকজন নিয়ে এসে মাঠভর্তি করে দেখাতে চায়।’

বিএনপির উদ্দেশে খায়রুজ্জামান বলেন, ‘আসুন, দেখুন, মাত্র এক দিনের নোটিশে আমরা কী রকম গণসমাবেশ মিছিল করতে পারি। আমরা শুধু রাজশাহী মহানগর করলাম। রাজশাহী জেলাকে আমরা আলাদা প্রোগ্রাম করতে বলেছি। আওয়ামী লীগ ভেসে আসেনি। রাজশাহী জেলা ও অন্যান্য জেলাকে আলাদাভাবে প্রোগ্রাম করতে বলেছি। আওয়ামী লীগ জনগণের দল।’

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সরকার অনুমতি দিয়েছে, সমাবেশ করেন। ভদ্রভাবে করেন, আট জেলা থেকে লোক নিয়ে এসে করেন, কোনোটাতে আপত্তি নেই। কিন্তু যদি শুনি কোথাও কোনো গাড়ি ভেঙেছেন, যানবাহনে আগুন দিয়েছেন বা জনগণের মাঝে অশান্তি তৈরি করেছেন, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কী করবে, সেটি তাদের ব্যাপার। কিন্তু দলীয়ভাবে আমরা ক্ষমতাসীন দল ছেড়ে দিতে পারি না। জনগণ আমাদের রায় দিয়েছে, জনগণের পক্ষে কাজ করার জন্য, উন্নয়ন করার জন্য, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করার জন্য। আমরা সেটি রক্ষা করতে ওয়াদাবদ্ধ।’

বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসবে উল্লেখ করে খায়রুজ্জামান আরও বলেন, ‘আপনারা সমাবেশ করছেন। আপনারা নির্বাচনও করবেন, তা-ও বুঝতে পারছি। এখন বলছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করবেন না। শেখ হাসিনার অধীনে করবেন না। আপনারা করবেন। আপনাদের কী করে করাতে হয়, তা শেখ হাসিনা খুব ভালো করেই জানেন। আপনারা যখন দেখবেন আম-ছালা দুটোই হারিয়ে যাচ্ছে, আবার ’১৪ সালের মতো সব হারিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যেতে পারে। সুড়সুড় করে নির্বাচনে আসবেন।’

খায়রুজ্জামান আরও বলেন, ‘আপনারা এখন আন্দোলন করছেন, আপনারা একটা দর-কষাকষি করতে চান। আমরা বুঝি। আপনাদের কিছু বেশি সিট লাগবে। এটি আপনাদের দর-কষাকষি। সংসদে পাঁচজন নিয়ে খুব কষ্টে আছেন। জনগণ যদি চায় সামনে নির্বাচনে ১০, ২০, ৩০, ৪০টা আসন পেতেও পারেন। তবে শেখ হাসিনাকে এত দুর্বল ভাবার কারণ নেই।’