ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় নারীকে, দুদিন পর মৃত্যু

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় এক নারী পোশাকশ্রমিককে চলন্ত বাসে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বাসের চালক ও চালকের সহকারীরা। কিন্তু ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে চলন্ত বাস থেকে সড়কে ফেলে দেন ওই নারীকে। দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ রোববার বেলা ১০টা ৫৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাথায় আঘাত পাওয়া ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আঘাত গুরুতর হওয়ায় তিনি আজ (রোববার) মারা যান।

ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে শুক্রবার রাতেই ওই নারীর এক ভাই বাদী হয়ে ভালুকা থানায় মামলা করেন। অভিযুক্ত বাসচালক রাকিব মিয়া (২১), চালকের সহকারী আনন্দ দাস (১৯) ও আরিফ মিয়াকে (২১) গতকাল শনিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, হত্যাচেষ্টা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।

নিহত নারীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায়। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় বসবাস করতেন। সেখান থেকে শ্রীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির পর ওই নারীর সঙ্গে পুলিশের কথা হয়। পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার রাত আনুমানিক পৌনে নয়টার দিকে শ্রীপুর থেকে ভালুকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি বাসে ওঠেন ওই নারী। ভালুকা আসতে আসতে বাসের সব যাত্রী বিভিন্ন স্থানে নেমে যান। বাসটি ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় এলে চালক ও চালকের দুই সহকারী ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বাধা দেওয়ায় চলন্ত বাস থেকে ওই নারীকে ফেলে দেন তাঁরা।

পুলিশ আরও জানায়, স্থানীয় বাসিন্দারা ওই নারীকে উদ্ধার করে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গতকাল শনিবার ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভুঁঞা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে যান। চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

আজ বিকেল পৌনে চারটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে থাকা নিহত নারীর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, লাশের ময়নাতদন্ত শেষ। তাঁরা লাশ নিয়ে কিশোরগঞ্জ রওনা হবেন। নিহত নারীর ভাই আরও জানান, তাঁর বোনের এক মেয়ে আর দুই ছেলে। ছেলেরা পড়াশোনা করছে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁর বোন পোশাক কারখানায় কাজ করে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি জানান তিনি।