মহাসড়কের পাশের একটি মাঠে ডাকা হয়েছে সমাবেশ। তবে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকজনের কারণে মহাসড়কে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থেমে থেমে ধীরগতিতে চলতে হয় যানবাহনকে। সমাবেশ শেষে প্রায় ২০ হাজার মানুষ নিয়ে একটি মিছিল হয়। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশেই যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ায় দেখা দেয় দুই কিলোমিটার যানজট। উপজেলা বিএনপির একটি অংশের কর্মসূচির কারণে আজ বুধবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই অংশে দেখা গেছে এমনই চিত্র। যানজটের কারণে তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হয় যানবাহনের চালক, যাত্রী ও পথচারীদের।
‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বেলা তিনটায় মিরসরাই থানার সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশের একটি মাঠে উপজেলা বিএনপির একটি অংশের উদ্যোগে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। মহাসমাবেশে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব গাজী নিজাম উদ্দিন, বারিয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক দিদারুল আলম মিয়াজি উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সভায় মিরসরাই ছাড়াও সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বেলা তিনটায় সভাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে একের পর এক মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় মিছিলের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে যানবাহন চলাচলে কিছুক্ষণ পরপরই ব্যাঘাত ঘটতে দেখা যায়।
সমাবেশে আসা লোকজন এবং মিছিলের কারণে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি দেখা গেছে। বিকেল সাড়ে চারটায় সমাবেশ শেষ হয়। এরপর বিএনপি নেতা নুরুল আমিনের নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার মানুষের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণের তাকিয়া বাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় মিছিলের কারণে মহাসড়কের দুই পাশেই যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সড়কে আটকে থাকতে দেখা যায় রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সকেও। মিছিল শেষে বড় তাকিয়া বাজারে পথসমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করার ঘোষণা দেন বিএনপি নেতা নুরুল আমিন। সমাবেশ শেষ হলেও সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বিকেলে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল নিয়ে ঢাকার গাজীপুরে যাচ্ছিলেন কাভার্ড ভ্যানের চালক মো. সাইফুল ইসলাম। যানজটে আটকে থাকা অবস্থায় তিনি বলেন, বড় তাকিয়া থেকে মিরসরাই সদর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অতিক্রম করতে তাঁর প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। মহাসড়কে এমন মিছিল-সমাবেশ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা মোটেই উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কে যানজটের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। যানজট হলেও কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। কিছু সময়ের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’
মহাসড়কের দুই কিলোমিটার জুড়ে মিছিলের বিষয়ে জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করেছি। আজ বিএনপির আরেকটি অংশ এক নেতাকে হাইলাইট করতে আলাদাভাবে দিবসটি পালন করেছে। সভা-সমাবেশ করে কোনোভাবে জনগণের দুর্ভোগ তৈরি করা কাম্য নয়।’