পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনের সন্ধানে অষ্টম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে। আজ রোববার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা করতোয়ার নদীতে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। তবে সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত বুধবার ঘটনার চতুর্থ দিন বিকেলে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর থেকে আর কোনো লাশ উদ্ধার হয়নি। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিখোঁজ তিন ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী, নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ তিনজন হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ার পাড়া এলাকার জয়া রানী (৪), দেবীগঞ্জ উপজেলার হাতিডোবা-ছত্রশিকারপুর এলাকার ভূপেন্দ্র নাথ বর্মণ (৪২) ও বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার সুরেন্দ্র নাথ বর্মণ (৬৫)।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন থেকে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ১২টি দলে বিভক্ত হয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এতে তাঁদের ৭০ জন সদস্য কাজ করছেন। করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে দিনাজপুরের আত্রাই নদী পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই উদ্ধার অভিযান চলছে। নদীর পানির পাশাপাশি যে সব জায়গায় চর পড়েছে সেসব স্থানে খোঁজ করছেন তাঁরা। ঘটনার দিন নৌকাটিতে ১০৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে তদন্ত করে জানতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ছয়জন সাঁতরে পাড়ে উঠেছিলেন, ২৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিখোঁজ আছেন তিনজন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রংপুর বিভাগের উপপরিচালক মো. জসীম উদ্দিন আজ সকাল সোয়া ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ তিনজনের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার অষ্টম দিনে এসে এ বিষয়টি নিয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসন ও ঢাকায় ফায়ার সার্ভিসের অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বাজারের পাশে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ নিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রীদের অধিকাংশই বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়।