গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় পাশেই অনন্ত গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি কারখানার ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আগুন দেয়। তাঁরা কারা, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
কারখানাটির নাম এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড। গাজীপুর সদর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তবে ভেতর থেকে এখনো প্রচুর ধোঁয়া বের হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ সকাল থেকেই কোনাবাড়ী এলাকায় দফায় দফায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ৫০–৬০ জন যুবক কারখানার ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান। ওই যুবকেরা কারা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছেন।
এ আগুন শ্রমিকরা দেননি দাবি করে গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছে। বিক্ষোভ করছে। সড়ক অবরোধ করছে। কিন্তু তারা কেন কারখানায় আগুন দিতে যাবে? ধারণা করছি, শ্রমিকদের আন্দোলনের সুযোগে তৃতীয় কোনো পক্ষ এ কাজ করছে।’
কারখানার মহাব্যবস্থাপক মনির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কারখানা ছুটি দেওয়ার পর কিছু ব্যক্তি হাতুড়ি, শাবল দিয়ে গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে কর্মকর্তাদের জিম্মি করেন। শ্রমিকের নাম করে বাইরের লোকও এখানে আসতে পারে। যাঁরা দেশের ক্ষতি চায়, যাঁরা গার্মেন্ট খাত চায় না, যাঁরা এই খাতের ধ্বংস চায় তাঁরাই আগুন দিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সপ্তম দিনের মতো আজ সকাল থেকেই কোনাবাড়ী ও আশপাশের এলাকায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের কয়েকবার সংঘর্ষ এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর মধ্যে গাজীপুরের বাসন এলাকায় আহত এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে কোনাবাড়ী এলাকায় শ্রমিকেরা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। এর মধ্যেই ওই এলাকায় এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটল।
সংশোধনী
প্রতিবেদনে এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটিকে নায়ক অনন্ত জলিলের বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। আসলে কারখানাটি অনন্ত গ্রুপের, অনন্ত জলিলের নয়। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।