ময়মনসিংহে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানের পর ফয়সাল খান নামের এক তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলায় এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার নেত্রকোনা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বাসিন্দা। ফয়সাল খানের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলায় এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি তিনি। এ ছাড়া ফয়সাল খানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকা তরুণীর স্বজন তিনি।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার ওই আসামিকে গতকাল গ্রেপ্তারের পর আজ পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তবে আদালতে রিমান্ড শুনানি না হওয়ায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে কক্সবাজার থেকে এই হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফরহাদ তানভীর ওরফে তুষার (২৫) ও মো. কাউছার মিয়া (২৪) নামের ওই দুজনকে পরে মামলাটিতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁদের দুজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত ২৭ নভেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
নিহত ফয়সাল খান ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে নগরের কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডে বড় বোনের বাসায় থেকে চাকরির চেষ্টা করছিলেন।
ফয়সালের স্বজনদের ভাষ্য, চার বছর ধরে ফয়সালের সঙ্গে একই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি মেয়েটির সরকারি চাকরি হয়। এরপর অন্য আরেকজনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হলে ফয়সালের সঙ্গে তরুণীর দূরত্ব তৈরি হয়। ফয়সাল বিয়েতে বাধা দিতে চাইলে তরুণীর বাবা ১০ নভেম্বর পর্নোগ্রাফি আইনে থানা ও ডিবি পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করেন। ওই দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফয়সালের বোনের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। ডিবির অভিযানের সময় দুজন বহিরাগত ব্যক্তি সঙ্গে ছিলেন। তাঁর মধ্যে একজন ছিলেন তরুণীর খালাতো ভাই। ডিবি অভিযান চালিয়ে চলে যাওয়ার পর বাসার সামনে ফয়সালকে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে উদ্ধার করে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৫ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীদের দাবি, ওই অভিযানের সময় তরুণীর এক খালাতো ভাই ও অজ্ঞাতপরিচয় আরেক তরুণকে সঙ্গে নিয়ে যায় ডিবি। ফয়সালের আহত হওয়ার ঘটনায় ১২ নভেম্বর রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন ফয়সালের বাবা সেলিম খান। এতে ওই তরুণীর বাবাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ছাদ থেকে ৬০ ফুট নিচে ফয়সালকে ফেলে দিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়।