রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেছেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনার সঙ্গে কারও সম্পৃক্ততা থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা টিমওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করছি। যাত্রীদের যাতে নিরাপদে পৌঁছে দিতে পারি, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। এখানে বারবার ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। তাই আমরা সংসদীয় কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে পরিদর্শন করার জন্য ছুটে এসেছি।’
আজ শনিবার কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর ও গুণবতী রেলস্টেশনের মাঝামাঝি তেজের বাজার এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। গত রোববার ওই এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে আসা জামালপুরগামী আন্তনগর ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছিল।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিদর্শন ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। আপনাদের সবার সহযোগিতা নিয়ে রেল দুর্ঘটনা রোধে আমরা কাজ করব। জনসাধারণ সচেতন হলে রেলের যাত্রা নিরাপদ হবে। রেলের স্লিপার দুর্বল আছে কি না বা কেউ রেললাইন কেটে নাশকতা করছে কি না, সে বিষয়ে এলাকাবাসী, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খেয়াল রাখতে হবে।’ এ সময় দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধারে সহযোগিতা করায় এলাকাবাসীসহ জনপ্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলের গাফিলতি আছে কি না, আমরা খতিয়ে দেখব। আমরা রেলপথের কাজে কোনো ত্রুটি আছে কি না, খতিয়ে দেখে মেরামত করে দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নেব। এই এলাকায় রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ায় রেলমন্ত্রী নিজেই ঘটনাস্থলে এসেছেন। রেলপথের যেসব স্থানে ত্রুটি আছে, সেগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা কাজ করছি।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নাহার বেগম, রেলসচিব হুমায়ুন কবির, রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর, রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসানসহ উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
গত রোববার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের হাসানপুর রেলস্টেশনের অদূরে তেজের বাজার এলাকায় আন্তনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৮টি বগির মধ্যে ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। দুর্ঘটনার কারণে ৩০০ মিটার রেললাইন ও চারটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।