সিলেটে ১৬ দিনের মধ্যে পৃথক স্থান থেকে তিন কিশোর নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজ কিশোরদের বয়স ১৩ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। নিখোঁজের ঘটনায় স্বজনেরা পৃথকভাবে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এই কিশোরদের নাম জালিজ মাহমুদ ওরফে সিয়াম (১৬), মো. উসমান আহমদ (১৩) ও মো. মাহফুজুর রাহমান (১৬)। তাদের মধ্যে দুজন মাদ্রাসার এবং একজন স্কুলের শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও নিখোঁজ কিশোরদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটের রুস্তমপুর এলাকা থেকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জালিজ মাহমুদ নিখোঁজ হয়। সে সিলেটের পীরেরবাজার এলাকার জহিরিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। জালিজ বরিশালের উজিরপুর গাজীরপাড়া গ্রামের ফরিদুল ইসলাম ও সুলতানা বেগম দম্পতির ছেলে। সিলেটের খাদিমনগর রুস্তামপুর আবাসিক এলাকায় মামা সোহাগ হাওলাদারের বাসায় থাকত সে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিক থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় সোহাগ হাওলাদার সিলেট শাহপরাণ (রহ.) থানায় ২০ সেপ্টেম্বর নিখোঁজের জিডি করেন।
নিখোঁজ শিক্ষার্থী জালিজ মাহমুদের মামা সোহাগ হাওলাদার বলেন, ব্যবসার সূত্রে তিনি সিলেটে থাকেন। তাঁর ভাগনে জালিজ পড়াশোনার জন্য সিলেটে এসেছিল। তাঁর বাসাতেই থাকত। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে ব্যবসার কাজ থেকে ঘরে ফিরে ভাগনেকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। এরপর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
সিলেট শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, পুলিশ নিখোঁজ স্কুলছাত্রের সন্ধান চালাচ্ছে।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের মো. উসমান আহমদ গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ আছে। সে রুস্তমপুর বীরমঙ্গল জামকান্দি গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে। উসমান স্থানীয় জামকান্দি নুরুল উলুম মাদানি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় উসমানের বাবা হানিফ আলী গোয়াইনঘাট থানায় ২৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরি করেন।
হানিফ আলী বলেন, ছেলে নিখোঁজের দিন মাদ্রাসায় যায়নি। বাড়ি থেকে সকাল ১০টার দিকে বের হয়ে সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিচ্ছেন। তবে ছেলের সন্ধান পাচ্ছেন না।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ নিখোঁজ কিশোরের সন্ধান করে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান করছে।
এ ছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের ডেমারগ্রামের মো. মাহফুজুর রাহমান ৪ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ আছে। সে ওই গ্রামের হাফেজ মাওলানা আবদুল বাসিতের ছেলে। মাহফুজুর সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার একটি মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগে পড়ত। ৪ অক্টোবর বাড়ি থেকে গোলাপগঞ্জের মাদ্রাসার উদ্দেশে চলে যাওয়ার পর তার আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজের মামাতো ভাই কিবরিয়া আহমেদ বলেন, এখনো মাহফুজুরের সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের ঘটনায় ৯ অক্টোবর জকিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ নেওয়া অব্যাহত আছে।
জকিগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ বলেন, ওই কিশোর নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। কিশোরের সন্ধানে কাজ করছে পুলিশ।