‘মা, মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে, মা মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে, কথা বলতে পারব না,’ এতটুকু বলতে বলতেই মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মোহাম্মদ নূর উদ্দিনের (৩৫)। এরপর পরিবারের কেউ আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। ফোন কাটার পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দুশ্চিন্তায় সারা রাত কেটেছে নূর উদ্দিনের পরিবারের।
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহতে কর্মরত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা নূর উদ্দিন। তিনি উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন শরীফের পুত্র। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
বুধবার সকালে নূর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর মা ইসলাম খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। ওই সময় সে বলে, সবার মোবাইল কেড়ে নিচ্ছে দস্যুরা। সে সবাইকে দোয়া করতে বলে। এর পর থেকে আর কথা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কলিজার টুকরা সন্তানকে সুস্থভাবে ফিরে পাওয়ার আশায় আছি। সবার কাছে দোয়া চাই ছেলের জন্য।’
নূর উদ্দিনের বড় ভাই মো. লোকমান বলেন, ‘গতকাল ইফতারের আগে ভাই ফোন দিয়ে বলে, জলদস্যুরা জাহাজে উঠে ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এরপর তারা বলে, যেভাবে বলি জাহাজ চালাও।’
গতকাল বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। জলদস্যুদের কবলে পড়া চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের জাহাজটি পরিচালনা করছে গ্রুপটির সহযোগী সংস্থা এস আর শিপিং লিমিটেড। জাহাজে নূর উদ্দিনসহ ২৩ বাংলাদেশি আছেন। তাঁরা জিম্মি হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে স্বজনদের।