নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন

কক্ষে ভোটার নেই, বাইরে লাইন দেখানোর চেষ্টা ছাত্রলীগের

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নারায়ণগঞ্জ সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সামনে দীর্ঘ লাইন। কিন্তু ভোটকক্ষ ফাঁকা। রোববার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পুরুষদের ভোটকক্ষে ভোটার নেই। কিন্তু বাইরে লাইন দেখানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে ছাত্রলীগের কর্মীদের। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি দেখে সেই লাইন আবার উধাও হয়ে যায়। ওই বিদ্যালয়ের ৬টি ভোটকক্ষে ২ ঘণ্টায় মোট ভোট পড়েছে ৩৬১টি।

আজ রোববার সকালে শহরের মাসদাইর শেরেবাংলা রোড এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। এ আসনে মোট ভোটার ৬ লাখ ৯৬ হাজার ১৩৯ জন। পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪৪১ জন এবং নারী ভোটার ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯২ জন।

এ আসনে মোট আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী (সোনালী আঁশ) আলী হোসেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী (ডাব) গোলাম মোরশেদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রার্থী (মশাল) ছৈয়দ হোসেন, জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) মুরাদ হোসেন জামাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (আম) শহীদ উন নবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (একতারা) সেলিম আহমেদ ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের (চেয়ার) হাবিবুর রহমান।

সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ের পুরুষ ভোটকক্ষের সামনে তরুণ ভোটারদের পৃথক দুটি লাইন দেখা গেছে। কিন্তু তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভোট দিতে কক্ষের দিকে যাচ্ছিলেন না। লাইনে সামনের দিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন নাজমুল হোসেন। তাঁর গলায় নৌকা প্রতীকের কার্ড ঝোলানো। তিনি বলেন, তিনি ভোট দিতে এসেছেন। কিন্তু ভোটার স্লিপ আনেননি। এ কারণে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও যাচ্ছেন না।
নাজমুল হোসেনের মতো একই কথা বলেন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আরও কয়েকজন। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি বাড়লে কিছুক্ষণ পর তাঁদের স্কুলমাঠে ছড়িয়ে যেতে দেখা গেছে।

সেখানে থাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, শীতের কারণে ভোটার উপস্থিতি কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। লাইনে যাঁরা দাঁড়িয়েছে আছেন, তাঁরা সবাই ভোটার। তাঁরা ভোট দিতে লাইন ধরেছেন।

বাইরে লাইন থাকলেও ভোটকক্ষের ভেতরে ছিল ফাঁকা।

বিদ্যালয়ের ৩ নম্বর ভোটকেন্দ্রটি নির্ধারিত এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাসদাইর এলাকার মোট ২ হাজার ৩৭৩ জন ভোটারের জন্য। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টায় এ কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে ৬০টি। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৮ প্রার্থী থাকলেও শুধু নৌকা, সোনালী আঁশ ও মশালের পোলিং এজেন্ট দেখা গেছে। তবে অন্য প্রার্থীদের কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, ভোটার উপস্থিতি কম। দুই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৬০টি। চারজন প্রার্থীর এজেন্ট থাকলেও অন্য চার প্রার্থী কোনো এজেন্ট দেননি বলে তিনি জানান।

ভোটকেন্দ্র-১–এ (পুরুষ) দক্ষিণ মাসদাইর এলাকার বাসিন্দারা ভোট দেবেন। ওই ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৪ হাজার ৪৭০ জন। ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১৬৮টি। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খন্দকার আবুল বাসার বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি সকালে কম ছিল। এখন লাইন বাড়ছে। আমরা আশাবাদী। বহিরাগত ভোটার আছে কি না, তা দেখতে হবে।’

ভোটকেন্দ্র-৪–এ মোটার সংখ্যা ২ হাজার ৩৭২। ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৪৮টি। এই কেন্দ্রে চার প্রার্থীর কোনো এজেন্টকে দেখা যায়নি।

বাইরে পুরুষ ভোটারের লাইন ভেতরে ভোটার না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল মালেক বলেন, ভুলবশত এই ভোটকেন্দ্রে চলে আসার কারণে হয়তো অনেকে আবার চলে গেছেন।

৫ নম্বর ভোটকেন্দ্রে (নারী) মোট ভোটার ৪ হাজার ৭৮২ জন। ২ ঘণ্টায় সেখানে ভোট পড়েছে মাত্র ১০টি। ভোটকেন্দ্র-৬–এ (নারী) মোট ভোটার ২ হাজার ২৯১ জন। সেখানকার ৬টি বুথে ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১০টি। ওই স্কুলের কেন্দ্র-২–এ (নারী) মোট ভোটার ৪ হাজার ৩২২ জন। সেখানে ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৬৫টি। সেখানে চার প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট দেখা গেছে।