ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার তিন তরুণ ঢাকার মিরপুরে ফুচকার দোকান চালান। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে চলাফেরা। একসঙ্গে সবাই সম্প্রতি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে যান। তাঁদের মধ্যে এক বন্ধু বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই কাজে তিনি গিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। ফিরতে দেরি হওয়ায় অন্য দুই বন্ধুকে ফোন দেন। তাঁকে আনতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় এক বন্ধু নিহত হয়েছেন।
ওই তিন বন্ধুর নাম শফিকুল ইসলাম (২৫), মনির হোসেন (২৩) ও আবুল হোসেন (২২)। তাঁদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ফতুর গ্রামে। তিন বন্ধুর মধ্যে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা এলাকায় মোটরসাইকেল-সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে শফিকুল নিহত হন। এ ঘটনায় মনির হোসেন আহত হয়েছেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন বন্ধু গত শুক্রবার গ্রামের বাড়িতে আসেন। এর মধ্যে আবুল হোসেন বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আজ সকালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। ফিরতে দেরি হওয়ায় বিকেলে মুঠোফোনে মনিরকে ফোন দিয়ে বলেন, তাঁকে যেন মোটরসাইকেলে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ এলাকা থেকে নিয়ে আসেন। বিকেল পাঁচটার দিকে আবুল হোসেনকে আনতে বন্ধু শফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে কালীকচ্ছ এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন মনির। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের কুণ্ডা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় মোটরসাইকেলটির। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু সড়কের ওপর ছিটকে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শফিকুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা নোমান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শফিকুলের মৃত্যু হয়। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন বেশি।
আহত মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মোটরসাইকেলটি তিনি চালাচ্ছিলেন। তাঁদের মাথায় হেলমেট ছিল না। তাঁদের মোটরসাইকেলের কাগজপত্রও ছিল না। তাঁরা তিন বন্ধু ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে চলাফেরা করেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর লাশ সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।