নরসিংদীতে মেঘনা নদীর উত্তাল ঢেউয়ে নৌকা ডুবে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ ছয়জন তলিয়ে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানার চরভাসানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নৌ পুলিশের একটি দল দ্রুত নদীতে নেমে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করে। রাতভর নিখোঁজ ছিল দুই ভাইবোন। আজ শনিবার সকালে ভাইয়ের লাশ ভেসে উঠলে তা উদ্ধার করা হয়। এখনো নিখোঁজ বোন।
লাশ উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইউসুফ (১২)। নিখোঁজ তার বোনের নাম জান্নাতুল আক্তার (১৪)। তারা নওগাঁর শৈলগাছির ইমতিয়াজ আলী ও দিলারা বেগম দম্পতির সন্তান। চাকরি সূত্রে ইমতিয়াজ পরিবার নিয়ে মাধবদীর টাটাপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন নিখোঁজ জান্নাতুলের বাবা ইমতিয়াজ আলী (৪২), মা দিলারা বেগম (৩৫), মামা আবদুল মতিন (৩৩), নৌকার মাঝি রুহুল আমিন (১৮) ও আবদুল্লাহ নামের একজন।
বঙ্গারচর নৌ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত আটটার দিকে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য মেঘনাবাজার ঘাট থেকে মাঝি রুহুল আমিনের মাছ ধরার নৌকায় চেপে নদী পার হচ্ছিলেন। তাঁরা নদীর ওপারে বগারগোত গ্রামে এক স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। রাত সোয়া আটটার দিকে নৌকাটি মাঝ নদীতে ঢেউয়ের তোড়ে উল্টে যায়। আশপাশের নৌকার কোনো মাঝি এ ঘটনা বঙ্গারচর নৌ পুলিশের ইনচার্জ অনিমেষ হালদারকে জানান। পরে নৌ পুলিশের একটি টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করেন। তবে দুই ভাইবোন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইউসুফ ও জান্নাতুল আক্তার নিখোঁজ ছিল। রাত ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও দুজনের হদিস মেলেনি। আজ সকালে আব্দুল্লাহর লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয় লোকজন লাশটি উদ্ধার করে নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে। এখনো জান্নাতুলের কোনো খোঁজ মেলেনি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইমতিয়াজ আলী বলেন, তাঁর দুই সন্তান জান্নাতুল ও আব্দুল্লাহ স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। ছেলেটির লাশ আজ সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েটিকে এখনো পাওয়া যায়নি। তাঁদের আর কোনো ছেলেমেয়ে নেই। ওদের ছাড়া এখন কীভাবে বাঁচবেন?
বঙ্গারচর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির (ইনচার্জ) উপপরিদর্শক অনিমেষ হালদার বলেন, নিখোঁজ দুই ভাইবোনের মধ্যে আব্দুল্লাহর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিখোঁজ জান্নাতুলের খোঁজ করা হচ্ছে।