লালমনিরহাট থেকে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন নাটোরে এসে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেছে। আজ বুধবার রাত আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।এতে ট্রেনের পাঁচ শতাধিক যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরে রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকার পথে রওনা হয়।
নাটোর রেলস্টেশন মাস্টারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটির নাটোর স্টেশনে আসার কথা ছিল বেলা তিনটায়। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি রাত আটটায় নাটোর রেলস্টেশনে আসে। স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ট্রেনটি নাটোর ও ইয়াসিনপুর স্টেশনের মাঝে কৈগাড়ি কিষ্টপুর বিলের মধ্যে দীর্ঘ সময় অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকে। খবর পেয়ে আবদুলপুর রেল জংশন থেকে মালবাহী ট্রেনের একটি ইঞ্জিন রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রেনটিকে পুনরায় নাটোর রেলস্টেশনে নিয়ে আসে।
রাতে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেনের পাঁচ শতাধিক যাত্রী চরম দুর্ভোগে সময় পার করছেন। ট্রেনের অভ্যন্তরে খাবার ও পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ট্রেনে পর্যাপ্ত আলো ও পানির সংকটও রয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা ট্রেনটির পাহারায় নিয়োজিত থাকলেও যাত্রীরা উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন।
ট্রেনের ‘ছ’ বগির যাত্রী বিচ্ছাদ আলী বলেন, তিনি সান্তাহার থেকে ট্রেনে উঠেছেন। ওঠার আগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্টেশনে বসে ছিলেন। এর প্রায় এক ঘণ্টা পরই ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তিনি। ‘ঙ’ বগির যাত্রী মেছের আলী বলেন, তিনি টিকিট কাটার পর মাত্র ১০০ টাকা হাতে নিয়ে ট্রেনে উঠেছেন। অথচ বিলম্বের কারণে ওই টাকা দিয়ে রুটি-কলা খেয়ে আছেন। এখন তিনি চিন্তা করছেন, ঢাকায় নামার পর তিনি কীভাবে রিকশার ভাড়া পরিশোধ করে গন্তব্যে পৌঁছাবেন।
‘গ’ বগির যাত্রী জেসমিন খাতুন বলেন, ট্রেনটি মাঠের মধ্যে অন্ধকারে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় তিনি ভীষণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। এমন অবস্থায় কখন, কীভাবে গন্তব্যে পৌঁছাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
নাটোর স্টেশনমাস্টার আসাদুজ্জামান বলেন, ট্রেনটি আট ঘণ্টার বেশি বিলম্ব হয়েছে। আবদুলপুর থেকে একটি রিলিফ ট্রেনের ইঞ্জিন আনা হয়। ওই ইঞ্জিন ট্রেনটিকে ঢাকায় নিয়ে যাবে। ট্রেনের নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হয়নি। তিনি বলেন, এটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা। এটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে।