বাইরে গণতন্ত্রের লেবেল লাগিয়ে দেশে বাকশাল কায়েম করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ রোববার সন্ধ্যায় রংপুরের সেন্ট্রাল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘বাইরে গণতন্ত্রের লেবেল লাগিয়ে দেশের ভেতরে বাকশাল কায়েম করা হয়েছে। সব সরকারি প্রতিষ্ঠান, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের হয়ে কাজ করছেন। তাই সরকার তাদের ইচ্ছেমতো নির্বাচন পরিচালনা করছে। বাকশালের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মানুষ সম্মান করে না; বরং ঘৃণা করে। সেই জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষকে দমিয়ে রাখতে শক্তির ব্যবহার করেন। এতে জনপ্রতিনিধিরা জনগণের শত্রু হয়ে যাচ্ছেন।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশে নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে অনেক বিতর্ক হচ্ছে। সরকার সংবিধান অনুযায়ী তাদের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করতে চায়। তারা দলীয়করণ ও আইন সংশোধন করে নিজেদের ক্ষমতায় নেওয়ার নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। এটি দেশে বহুদিন ধরে হয়ে আসছে। অন্যদিকে নির্বাচিত হওয়ার পর সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে ভয় পায়। পাঁচ বছর মেয়াদে অনেক কাজ করার সুযোগ থাকলেও তারা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণ থেকে দূরে চলে গেছে।
জি এম কাদের আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। জাতীয় পার্টিসহ সব দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্য এবং তা বাতিলের জন্য আন্দোলন করেছে। আমরা সরকারের অধীনেও নির্বাচন চাই না, আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেও নির্বাচন চাই না। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা নতুন পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাই। এই ফর্মুলা আমাদের কাছে আছে। সরকার ভয়ভীতির মাধ্যমে জোর করে নির্বাচনের মাধ্যমে জয়লাভের কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।’
বিগত সময়ে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সুযোগ পেলেই জাতীয় পার্টিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেছে। জাতীয় পার্টিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি, কার্যালয়ে তালা ঝোলানো হয়েছিল। রাস্তায় নেতা-কর্মীরা নামলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এমন দমনপীড়নের মধ্যেও জাতীয় পার্টি এখন শক্তিশালী অবস্থানে আছে।
জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম মহাসচিব এস এম ইয়াসির আহমেদ, সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, লালমনিরহাট জেলার সদস্যসচিব জাহিদ হাসান, গাইবান্ধার সদস্যসচিব সারোয়ার হোসেন, নীলফামারীর সদস্যসচিব সাজ্জাদ পারভেজ, রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি ফারুক আহমেদ মন্ডল, মহানগর ছাত্রসমাজের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ।