কলেজছাত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে বাবার দাবি

কলেজছাত্র ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে বাবার সংবাদ সম্মেলন করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীতে এক কলেজছাত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বাবা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সালাম নামের এই ব্যক্তি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। পাশাপাশি ছেলের মুক্তি চান তিনি।

আবদুস সালামের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ক্ষিদ্র খলসি গ্রামে। তাঁর দাবি, গত ২৭ নভেম্বর রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার খড়খড়ি এলাকা থেকে তাঁর ছেলে রায়াতুল ইসলাম ওরফে রাজকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখায় র‍্যাব। এ নিয়ে র‍্যাবের পক্ষ থেকে রায়াতুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। মামলায় দুর্গাপুরের আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

রায়াতুল এখন কারাগারে। রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে এসএসসি পাসের পর সে এখন নগরের অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তাঁর বাবার দাবি, র‍্যাবের করা মামলায় রায়াতুলের বয়স দেখানো হয়েছে ১৯ বছর। প্রকৃতপক্ষে গ্রেপ্তারের সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর ১১ মাস।

নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে র‍্যাব সদস্যরা রায়াতুলকে দিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তার বাবা আবদুস সালাম।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সালাম বলেন, ‘আমার ছেলে খুবই মেধাবী। ছোটবেলা থেকেই সে রাজশাহী শহরে থাকে। গত ২৭ নভেম্বর সে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। গগনবাড়িয়া বটতলা এলাকায় র‍্যাবের একটি গাড়ি তার গতিরোধ করে। এ সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট না থাকা এবং দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে র‍্যাব সদস্যরা এলাকার বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তার কথাও বলেন। কিন্তু রায়াতুল জানায়, সে ১৫ বছর ধরে রাজশাহী শহরে থাকে। এলাকার কাউকেই সে চেনে না। এরপর তাকে সেখান থেকে মোটরসাইকেলসহ ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।’

কারও প্ররোচনায় ছেলেকে ফাঁসানোর অভিযোগ করে আবদুস সালাম আরও বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার পর খড়খড়ি এলাকায় জঙ্গলের ভেতর থেকে তাকে দিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করানো হয়। এই ঘটনার ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে। অথচ র‍্যাব এজাহারে বলেছে, অস্ত্র পাওয়া গেছে তার হাতে। নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে র‍্যাব সদস্যরা রায়াতুলকে দিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র‍্যাব-৫-এর রাজশাহীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, ‘আমাদের কাছে খুবই শক্তিশালী গোয়েন্দা তথ্য ছিল। সমস্ত নিয়মকানুন মেনেই র‍্যাব অভিযান চালিয়ে রায়াতুলকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আটক করে তার দেখানো স্থান থেকেই অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। সে ছিল অস্ত্রের বাহক। অস্ত্রের মালিককে তখন তাঁরা ধরতে পারেননি। পরে গোয়েন্দা পুলিশ অস্ত্রের মালিককেও ধরেছে। এই ছেলে আসলে অস্ত্র কারবারের সঙ্গে জড়িত।’