চার দিন বন্ধ থাকার পর আজ বুধবার সকাল থেকে গাজীপুরে শিল্পকারখানা খুলেছে। তবে কারখানাগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শ্রমিকের উপস্থিতি কিছুটা কম বলে জানা গেছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন ঘিরে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজীপুরের বিভিন্ন স্থাপনা।
তবে সংঘাতময় পরিস্থিতি গত দুই দিন অনেকটা স্বাভাবিক হলেও জনমনে এখনো আতঙ্ক কাটেনি। এখনো স্বাভাবিক হয়নি যান চলাচল।
আজ সকাল থেকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের যৌথভাবে টহল দিতে দেখা গেছে।
সকাল থেকে গাজীপুরের দুই মহাসড়ক ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, সেখানে নেই চিরচেনা চিত্র। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল না করলেও স্বল্প পরিসরে স্বল্প দূরত্বের পরিবহনগুলো চলাচল করছে। লোকজন এখনো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম বাইরে যাচ্ছেন। জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা বের হচ্ছেন, তাঁরা অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাচ্ছেন। মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল আছে।
সকালে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে টহলে এসে বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রায় চার-পাঁচ দিন গার্মেন্টস বন্ধ ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ায় গার্মেন্টস কারখানা খুলে দিয়েছে। এখন গার্মেন্টস শিল্পে যাতে কোনা দুষ্কৃতকারী এসে নাশকতা সৃষ্টি না করতে পারে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য আমরা নিয়োজিত আছি।’
গাজীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে ১৮ জুলাই থেকে। তবে সেই আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয় ১৯ জুলাই দুপুরের পর। শহরের শিববাড়ী, বাসস্ট্যান্ড, নেয়ামত সড়ক, ডুয়েট, চন্দনা চৌরাস্তা, গাছা, বোর্ডবাজার, বড়বাড়ি, টঙ্গী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। টানা দুই দিন সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পুরো এলাকা, ঘটে প্রাণহানি। আগুন দেওয়া হয় চারটি পুলিশ বক্স, পুড়িয়ে দেওয়া হয় অর্ধশত গাড়ি। হামলা করা হয় সড়ক ভবন, ডেসকো, থানাসহ সরকারি অনেক স্থাপনায়। তবে গত সোমবার থেকে গাজীপুরের কোথাও নতুন করে হামলা বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।