তালুকদার আবদুল খালেক ও শফিকুল ইসলাম
তালুকদার আবদুল খালেক ও শফিকুল ইসলাম

চাঁদা না পেয়ে দোকান ভাঙার অভিযোগে খুলনার সাবেক মেয়রসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

খুলনায় চাঁদা না পেয়ে দোকান ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অন্য দুজন হলেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ এবং জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান।

আজ রোববার দুপুরে খুলনার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন শেখ মো. মেরাজ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। মামলার তিন আসামির বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন বাদী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগে মামলাটি করেছেন মেরাজ হোসেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপকমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মেরাজ হোসেনের বাবা শেখ মো. আবুল হোসেন ২৮ বছর ধরে খুলনা নগরের ডাকবাংলো মোড়ের হুগলি বেকারির পেছনে জমি ইজারা নিয়ে ব্যবসা করছেন। তাঁদের ‘এ হোসেন এন্টারপ্রাইজ’ নামের দোকানে প্রায় এক কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। ২০২৩ সালের ২০ জুন বেলা তিনটার দিকে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তাঁর বাবাকে জমির মূল কাগজপত্র নিয়ে ডেকে পাঠান। যাচাইয়ের কথা বলে মূল কাগজ রেখে দিয়ে ঘোরাতে থাকেন।

এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, কাগজপত্র নেওয়ার এক বছর পর গত ১২ জুন তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। ওই দিন জেলা পরিষদে গেলে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ। টাকা না দিলে মূল কাগজ ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। দোকানের বরাদ্দ বাতিলের হুমকিও দেন চেয়ারম্যান। ওই দিন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই জমি খুলনা সিটি করপোরেশনের অধীন হস্তান্তর হওয়ায় মেয়রকেও ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে।

বাদীর অভিযোগ, এই ৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় গত ২১ জুন রাত ১০টার দিকে মেরাজ হোসেনের দোকানটি ভেঙে ফেলা হয়। এতে দোকানে প্রায় ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ওই সময় সদর থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। আসামিরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।